হত্যাকান্ডের দেড় মাস পর টেকনাফে করিম উল্লাহ হত্যার রহস্য উদঘাটন হতে চলেছে।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ সদস্যরা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মাষ্টার মাইন্ড নিহতের আপন মেয়ের স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে ।
গত ৩০ অক্টোবর (শনিবার) তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, “এ হত্যাকান্ডে অন্যতম মাষ্টার মাইন্ড আপন মেয়ের জামাতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তার কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসীদেরও আটক করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, টেকনাফ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কুলালপাড়া এলাকার মৃত হাজী সাব্বির আহমেদের ছেলে হাজী করিম উল্লাহর মৃতদেহ গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কচ্ছপিয়া ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
সে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে কোথাও দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যান। এ সময় তার মোবাইল বন্ধ ছিল। পরের দিন সকালে অজ্ঞাত মৃতদেহ হিসেবে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর মর্গে প্রেরণ করে। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবার তার লাশ সনাক্ত করে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিহত হাজী করিম উল্লাহর জানাযা শেষে টেকনাফ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী মুরশিদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে।
এরপর থেকে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তারেক রহস্যময় এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাজী করিম উল্লাহ ওই দিন রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মাঠ পাড়ায় মেয়ের বাড়িতে দাওয়াতে অংশ নেয়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে খুনের শিকার হন করিম উল্লাহ।
কিন্তু নির্মম হত্যাকান্ডের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শুরু থেকেই অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিল নিহত করিম উল্লাহ’র স্ত্রী ও জামাতা।
এতে আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হয় যে এই খুনের মাস্টার মাইন্ড নিহতের স্ত্রী ও মেয়ের জামাতা। কিন্তু স্ত্রী মামলার বাদী হওয়ায় পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে মামলার তদন্ত কাজ পরিচালনা করছে। তথ্য প্রযুক্তি, মোবাইল ট্র্যাকিং ইত্যাদির মাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা হাজী করিম উল্লাহর খুনের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে আপন মেয়ের স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে চিহ্নিত করে। এদিকে আগে থেকে স্ত্রী ও মেয়ের জামাতা কিছু জানেনা বলে দাবী করলে পরে লাশ উদ্ধার হওয়ার আগের দিন রাতে মেয়ের বাড়িতে দাওয়াতে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে স্ত্রী ও জামাতা।
অবশেষে মামলার প্রায় দেড় মাসের মধ্যে তাকে আটক করে হত্যার আংশিক রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান,”আটক আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কি কারনে এ হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়েছে সেই রহস্য উন্মোচন হবে।