বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ, মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

টানা ৩১ দিন ছুটি শেষে আজ খুলছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২১ জানুয়ারি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ করা হয়েছিল। প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১ মার্চ খোলার কথা থাকলেও পবিত্র শবেমেরাজের কারণে এসব প্রতিষ্ঠান খুলবে ২ মার্চ।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে শুধু তারাই সশরীরে শ্রেণিকক্ষে অংশ নিতে পারবে। বিষয়টি শিক্ষকরা নিশ্চিত করবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও গেটে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে শ্রেণিকক্ষ, প্রবেশপথে কিছুতেই জটলা থাকতে পারবে না। করোনা সম্পর্কে সতর্ক করতে গেটে ও অন্যান্য জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রেণিকক্ষে দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আগে জেড আকৃতি বা তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে হবে।

মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে ইতঃপূর্বে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেগুলোই এখনও বাস্তবায়ন করতে হবে। ক্লাসরুটিনও আগের মতো থাকবে। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে দুদিন আসবে। এ ক্ষেত্রে শুধু এসএসসি ও এইচএসি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম থাকবে। তারা সপ্তাহে প্রতিদিনই আসবে।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার জন্য ২০ দফা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। ইতোমধ্যে রোববার রাতে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে ওই আদেশের বেশিরভাগ নির্দেশনাই ইতঃপূর্বে ৫৪১ দিন ছুটি থাকার পরে ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে জারি করা হয়েছিল। আগের মতোই এ নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে কাজ করতে মাউশির সব আঞ্চলিক পরিচালক ও উপ-পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুনরায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধুয়ে-মুছে ও পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানে এই প্রস্তুতি বেশি দেখা গেছে। পাশাপাশি শহরের বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে বলে জানিয়েছেন যুগান্তর প্রতিনিধিরা। মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয় বিশেষ করে উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন এ ক্ষেত্রে শতভাগ তদারকি করেনি বলে অভিযোগ এসেছে।

রোববার রাতে মাউশির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার লক্ষ্যে অনুসরণীয় নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ; পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে পাঠদান ও অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব প্রবেশ ও প্রস্থানপথ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা এবং একটি প্রবেশ বা প্রস্থানের পথ থাকলে সে ক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশ ও প্রস্থানের পথের ব্যবস্থা করা; প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা।

এতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান ও বাসা থেকে আসা-যাওয়া করবে, সে বিষয়ে তাদের অবহিত করা; প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসাবে প্রস্তুত রাখা; সব ভবনের কক্ষ, বারান্দা, সিঁড়ি, ছাদ ও আঙিনা যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা; প্রতিষ্ঠানের সব ‘ওয়াশ রুম’ নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা ও পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করা; শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবকসহ অন্য কারও প্রবেশ, অবস্থান ও প্রস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করা।

নির্দেশনার মধ্যে আরও আছে-শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী এবং অন্যদের সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করা; প্রতিষ্ঠানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা; শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা। খেলার মাঠ, ড্রেন ও বাগান যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা; প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করা; স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালিত করার ব্যবস্থা করা এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রথম বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার।


আরো খবর: