বেইজিং, ১৯ আগস্ট – ঋণভারে জর্জরিত চীনা এভারগ্রান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। এভারগ্রান্ডের বিশাল ঋণ নিয়ে ২০২১ সালেই খেলাপি হয়েছে। তবে ঋণদাতাদের সাথে কয়েক বিলিয়ন ডলারের এক চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ঋণভারে জর্জরিত চীনা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এভারগ্রান্ডে যুক্তরাষ্ট্রে দেউলিয়াত্ব থেকে সুরক্ষার জন্য আবেদন করেছে।
এ বিষয়ে বিবিসির তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলেও এভারগ্রান্ডে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চায়না এভারগ্রান্ডে গ্রুপের রিয়েল এস্টেট শাখার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী চীনের ২৮০টিরও বেশি শহরে কোম্পানিটির ১,৩০০টিরও বেশি নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া এই গ্রুপের অন্যান্য বহু ব্যবসার মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ এবং একটি ফুটবল ক্লাব। এখন হয় তো কোম্পানিটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রক্ষা করার অনুমতি দেবে।
বৃহস্পতিবার চায়না এভারগ্রান্ডে গ্রুপ নিউইয়র্কের এক আদালতে দেউলিয়াত্ব সুরক্ষার লক্ষ্যে আবেদন করেছে। এভারগ্রান্ডে গ্রুপের শুধু রিয়েল এস্টেট খাতেরই মোট আনুমানিক ঋণ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চ্যাপ্টার-ফিফটিন নামে আইনের এক অধ্যায়ের মাধ্যমে কোন বিদেশি কোম্পানির মার্কিন সম্পদকে রক্ষা করা হয় যাতে কোম্পানিটি তার ঋণ পরিশোধের বিষয়ে ঋণদাতাদের সাথে আলোচনা করতে পারে।
ঋণ পরিশোধে খেলাপি হওয়ার পর এভারগ্রান্ডে তার ঋণদাতাদের সাথে চুক্তি নিয়ে আলোচনার কাজ আবার শুরু করছে। তবে এই গ্রুপের শুধু রিয়েল এস্টেট খাতেরই মোট আনুমানিক ঋণ ছিল ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ঋণগ্রস্ত প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। গত বছর থেকে এই কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন বন্ধ রয়েছে।
এভারগ্রান্ডে গত মাসেই প্রকাশ করেছে যে শুধুমাত্র গত দু’বছরেই কোম্পানিটির ৫৮১.৯ বিলিয়ন ইউয়ান (৮০ বিলিয়ন ডলার) লোকসান হয়েছে। শুধু এভারগ্রান্ডেই না, গত সপ্তাহে আরেকটি বৃহদায়তন চীনা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি কান্ট্রি গার্ডেনও সতর্ক করেছে যে বর্তমান অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে তাদের ৭.৬ বিলিয়ন ডলার লোকসান হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে।
নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলো শেষ করতে বিনিয়োগদাতা খুঁজে পেতে চীনের রিয়েল এস্টেট খাতের আরও কিছু বড় কোম্পানি এখন রীতিমতো সংগ্রাম করছে।
আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুডি’স অ্যানালিটিকসের স্টিভেন কখরান বিবিসিকে বলেন, এই সমস্যার মূলে রয়েছে অসমাপ্ত প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করা। কারণ এর মাধ্যমে অন্তত কিছু হলেও অর্থায়ন পাওয়া সম্ভব হবে। রিয়েল এস্টেট খাতে অনেক ঘর-বাড়ি নির্মাণের আগেই বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু কোন কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলে, ক্রেতারাও বন্ধকী অর্থ জমা করা থামিয়ে দেন। ফলে এটা রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের আয়ের ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল