ইমরান আল মাহমুদ,উখিয়া:
বহুমুখী উদ্যোগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কমছেনা অস্থিরতা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাদক-অস্ত্রের ঝনঝনানি। ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ড্রোন ব্যবহার করে সন্ত্রাসীদের আস্তানা শনাক্ত করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক নাইমুল হক।
ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে এপিবিএন’র দুটি ব্যাটালিয়ন উখিয়াতে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ৮এপিবিএন’র তথ্য অনুযায়ী ১১টি ক্যাম্পের ৭৭৩টি সাব ব্লকে সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার পুলিশের পাশাপাশি ক্যাম্পের নিরাপত্তায় স্বইচ্ছায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
তবুও থামছেনা মাদক পাচার, অস্ত্রের ঝনঝনানি। প্রতিনিয়ত আটক হচ্ছে রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা।
সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় ৮এপিবিএন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিহাব কায়সার খান জানান,ক্যাম্পে ভলান্টিয়ারদের কার্যক্রম বৃদ্ধি, তালিকাভুক্ত দুষ্কৃতকারী গ্রেফতার ও রাতে টহল জোরদারের ফলে ক্যাম্পের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীরা আইনের আওতায় আসছে।
১৪এপিবিএন অধিনায়ক নাইমুল হক বলেন,”বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মানবিকতার দিক দিয়ে আশ্রয় দিয়েছে। আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে ১৪এপিবিএন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সার্বক্ষণিক কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। যার ফলে মাদক পাচারে জড়িতরা প্রতিনিয়ত আটক হচ্ছে।”
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ও মাদকের গডফাদারদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার নাইমুল হক।
মঙ্গলবার(৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রশ্নের জবাবে ১৪এপিবিএন অধিনায়ক বলেন,”রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ নেই। তবে কথিত আরসা’র নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারী ক্যাম্পে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে বিট পুলিশিং,রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার টিম করে দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মাঝে ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধে নাটক পরিবেশনের মাধ্যমে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।”
রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ রোধে ১৪এপিবিএন এর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন,”ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ রোধে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারপরও রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বের হওয়ার চেষ্টাকালে অনেকে আটক হচ্ছে। তবে,ক্যাম্পের চেকপোস্টে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ রয়েছে।”
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সম্প্রতি দেওয়া ১৪এপিবিএন’র সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়,চাঞ্চল্যকর মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ১৪এপিবিএন সদস্যরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে হত্যার রহস্য উদঘাটন, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আজিজুল হক সহ ১২জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। যার মধ্যে ৪জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
অন্যদিকে, ছয় রোহিঙ্গা হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতারসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে দুষ্কৃতকারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। যাদের গ্রেফতারে ৮এপিবিএন আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে।