মস্কো, ০৫ জুলাই – রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদের গ্রুপ ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগিন প্রিগোজিনের সব সম্পদ একে একে দখল করছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বেসরকারি সামরিক কোম্পানি। ইউক্রেনের কয়েকটি অঞ্চল দখলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এই গোষ্ঠীটির। গত মাসে ওয়াগনার নেতা প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন। পরে তারা রস্তোভ-অন-দনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলার সদরদপ্তর দখল করে নেয়। এরপর তারা ‘বিচারের দাবিতে’ মস্কোর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। রাজধানী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। তিনি এখন বেলারুশেই অবস্থান করছেন।
বিদ্রোহ ঘোষণার পর ২৪ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সদর দপ্তরে অভিযান চালায় রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী। প্রিগোজিনের মালিকানাধীন প্যাট্রিয়ট মিডিয়া গ্রুপের কম্পিউটার এবং নথিগুলি জব্দ করা হয়। অথচ এই প্যাট্রিয়ট মিডিয়া গ্রুপ পুতিনের পক্ষে বছরের পর বছর প্রচার চালিয়েছে।
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্যাট্রিয়টের অনলাইন ফ্ল্যাগশিপ রিয়ান ফ্যানের একজন সিনিয়র কর্মী।
ওই সময়ের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওরা সামনের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকল। দেখে মনে হয়েছিল, তারা একটি পতিতালয় ধ্বংস করছে, দেশপ্রেমিক সাংবাদিকদের কর্মক্ষেত্র নয়।’
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রিগোজিন তার ভাড়াটে বাহিনীর বাইরেও বিশ্বের সবচেয়ে ছায়াময় এবং জটিল কর্পোরেট কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন রাশিয়ায়। তার ব্যবসার মধ্যে ছিল মিডিয়া, অবকাঠামো, খনি, সিনেমা এবং ক্যাটারিং। কিন্তু তিন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনার পর মস্কো প্রিগোজিনের কর্পোরেট দুনিয়া ভাঙতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, প্রিগোজিনের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সম্পদের তদন্ত করা হবে। গত সপ্তাহে প্রিগোজিনের মালিকানাধীন অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, আফ্রিকায় প্রিগোজিনের কিছু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দখল নিতে মস্কোর পক্ষে খুব প্রয়োজন ছিল। ক্রেমলিন সম্ভবত মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে প্রিগোজিনের লাভজনক খনি চুক্তির নিয়ন্ত্রণ নিতে আগ্রহী।
সূত্র: রাইজিংবিডি
আইএ/ ০৫ জুলাই ২০২৩