নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে দিন দিন প্রবাল কমছে। কমছে দ্বীপের বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকাও। বিপরীতে বাড়ছে পর্যটক, বাড়ছে বিপদ। এমতবস্থায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন রক্ষায় নতুন হোটেল ও অবকাঠামো বন্ধসহ প্রবাল রক্ষায় দ্বীপে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্য দ্বীপে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত তদারকি করবে ম্যাজিস্ট্রেট, পর্যটকদের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচার, প্রত্যাক বীচ পয়ন্টে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা, ময়লা ফেলতে আলাদা ভ্যান ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব কাজে রাত দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ২০ জন পরচ্ছিন্নতা কর্মী। এছাড়া দ্বীপের জনপ্রতিনিধি ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা এসব কাজে উপজেলা প্রশাসনকে সহতায় করছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গতকাল সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পলিথিন ও ওয়ান টাইম প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে প্রচারণা চালিয়েছে টেকনাফের ইউএনও পারভেজ চৌধুরীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহতায় একটি দল। এতে দ্বীপে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেন্টমার্টিনের চার দিকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা চালায় তাঁরা। এসময় বর্জ্য সরানোর জন্য বীচের পয়েন্ট পয়েন্ট বাতলি প্রদানের পাশাপাশি প্রবাল রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বীচ কর্মীসহ সবাইকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী জানান, ‘দেশের-প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন পর্যটনশিল্পের বিকাশে-এর গুরুত্ব অস্বীকারের অবকাশ নেই। ফলে দ্বীপের প্রবাল রক্ষাসহ পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে আমরা ইতিমধ্য বেশকিছু কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে দ্বীপ রক্ষায় সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ‘আগে দ্বীপ, তারপর পর্যটক। দ্বীপ না বাচঁলে পর্যটক আসবে কিভাবে? ইতি মধ্য টেকনাফের ইউএনও স্যারের নেতৃত্বে দ্বীপ রক্ষায় বেশকিছু কার্যক্রম শুরু করেছে, এটি অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। তবে বিশেষ করে দ্বীপে পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরী।’
প্রবাল দ্বীপে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগ প্রশংসনীয় উল্লেখ করে কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, ‘দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া স্থাপনা তৈরি না করা এবং প্রবালসহ বিরল প্রজাতির কচ্ছপ ও শামুক রক্ষা করা না গেলে সেন্টমার্টিন হারিয়ে যাবে। ফলে সরকারের উচিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন রক্ষায় সরকারের নীতিমালা তৈরী করে সেটি দ্রæত বাস্তবায়ন করা।’