পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি::
কক্সবাজারের পেকুয়ায় মিশুক চালক নাজিম উদ্দিন ওরফে গুরা মিয়া (২৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর নিহতের মা দিলদার বেগম (৪৬) বাদি হয়ে পেকুয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলা নং -১১/২৪। মামলায় পেকুয়া সদর ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য শাহেদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, সদর ইউপির পুর্ব মেহেরনামা এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে লিয়াকত আলী (৩৫), মৃত ওবায়দুল হোসেনের ছেলে মো.শহিদুল্লাহ (৫০), কবির আহমদের ছেলে আমান উল্লাহ (৩০), শহিদুল্লাহ ছেলে মো. বাদশাহ (২৫), গোলাম কাদেরের ছেলে ঈমাম উদ্দিন (৩৫), মুবিন উদ্দিন (৩২), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো.ছোটন (২৫), মৃত আবদুল মতলবের ছেলে এনাম হোসেন (৫০), সৈকত পাড়ার নুরুল আলম, পুর্ব মেহেরনামা পশ্চিম পাড়ার মনু সওদাগের ছেলে মুবিনুল ইসলাম (৩০) ও শিলখালী সবুজ পাড়ার মৃত হাছান আলীর ছেলে মো.কাছিম আলী (৫০)। এছাড়া মামলায় আরো ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
জানাগেছে, গত ১৪ ডিসেম্বর শনিবার ভোররাতে মিশুক চালক নাজিম উদ্দিন ওরফে গুরামিয়াকে সদর ইউনিয়নের মুরার পাড়ার রাস্তার মাথা নামক স্থান থেকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে তাকে দুর্বৃত্তরা মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী পাউবোর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ওই জায়গায় হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে। খবর পেয়ে গুরা মিয়ার স্বজনরা ভোরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় মুমুর্ষ অবস্থায় জখমি গুরামিয়াকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থা অবনতি দেখতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা নাজেম উদ্দিন ওরফে গুরামিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। নাজিম উদ্দিন ওরফে গুরামিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুর্ব মেহেরনামা এলাকার আকতার আহমদের পুত্র।
এজাহারসুত্রে জানাগেছে, নাজিম উদ্দিন ও চকরিয়া বরইতলি ইউনিয়নের পহরচাঁদা মুন্সিঘোনার জনৈক ওমর ফারুখের মধ্যে বিরোধ ছিল। দুইজনের বিরোধ নিষ্পত্তির কথা বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহেদুল ইসলাম গুরামিয়ার মায়ের কাছ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা নেন। এমনকি একটি অলিখিত নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়েছে। তিন-চার মাস পেরিয়ে গেছে। অথচ এ দুজনের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। এনিয়ে মিশুক চালক গুরামিয়ার সাথে শাহেদ মেম্বারের মধ্যে একাধিকবার বচসা ও বাকবিতন্ডা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিহতের মা ও মামলার বাদি দিলদার বেগম বলেন, শনিবার ভোররাতে মুঠোফোনে একটি কল আসে। ফোনটি আমার মেয়ে রিয়ামনি রিসিভ করে। এসময় লিয়াকত আলী পরিচয়ে মুঠোফোনে গুরামিয়াকে চুরির দায়ে একটি বাড়িতে আটকিয়ে রাখার কথা বলে। তারা এভাবে ৪/৫ বার ফোনে কথা বলে। পরে আমরা গিয়ে দেখি আমান উল্লাহর বাড়ির পাশে চলাচল রাস্তায় আমার ছেলে গুরামিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রথমে তাকে নিয়ে আসতে বাধা দেয় তারা। পরে আমার কাছ থেকে অলিখিত ষ্ট্যাম্প নেয় তারা। এরপর হামলাকারীর কবল থেকে ছেলেকে উদ্ধার করি।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলের সারা শরীরে মারাত্বক জখম আছে। অন্ডকোশেও ছুরিকাঘাত করে। গুরা মিয়া কক্সবাজার শহরে মিশুক গাড়ি চালায়। তাকে প্রলোভন দেখিয়ে সেখানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। চুরির দায়ে নয়। মুলত ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। আমি ছেলের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা মামলা রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
###