পেকুয়া প্রতিনিধি : কক্সবাজারের পেকুয়ায় নারী এনজিও কর্মী ও কিশোরের যুগল আত্মহত্যা করেছে। পেকুয়া থানা পুলিশ কিশোর ও মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পেকুয়ারচর ও মগনামা ইউনিয়নের চেরাংঘোনায় আত্মহত্যার এ পৃথক ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে একজনের নাম রুজিনা আক্তার (২১)।
মেয়েটি বেসরকারী এনজিও সংস্থা এসআরপিভি’র মাঠ কর্মী ও চকরিয়া সরকারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী। তার পিতার নাম আবুল বশর। অপর আত্মহত্যাকারী কিশোরের নাম রিদুয়ানুল হক (১৭)। তিনি মগনামা ইউনিয়নের চেরাংঘোনা গ্রামের মৃত ছৈয়দ নুরের পুত্র।
আকস্মিক ওই দুই জনের আত্মহত্যায় প্রাণ সংহার ও লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। সুত্র জানায়, রুজিনা আক্তার ও রিদুয়ানের পরিবারের মধ্যে পূর্ব থেকে ঘনিষ্টতা রয়েছে। রিদুয়ানের বড় ভাই মিজান ও রুজিনার বিয়ের কথাবার্তা চুড়ান্ত হয়েছিল। মাঝখানে দুই পরিবারের অমতে এ ২ জনের বিয়ে অনিষ্পত্তি থেকে গেছে। রুজিনা চকরিয়া সরকারী কলেজের অনার্সের ছাত্রী।
অপরদিকে রিদুয়ান অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক কিশোর। রুজিনা বেসরকারী এনজিও সংস্থা এসআরপিভি’র কর্মকর্তা। সোনালী বাজারের একটি স্কুলে শিক্ষকতাও করতেন। সম্প্রতি রুজিনার বিয়ে ঠিকফর্দ হয়। হবু বরের নাম রেজাউল করিম। পেশায় কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা। তার বাড়ি সদর ইউনিয়নের নন্দীরপাড়ায়।
এ দিকে রুজিনার বিয়ের প্রথম ঠিকফর্দ হয়েছিল রিদুয়ানের বড় ভাই মিজানের সাথে। সম্প্রতি ওই এনজিও কর্মীর বিয়ে অন্যত্রে হচ্ছে এ খবর জানাজানি হয়। মিজানের ছোট ভাই রিদুয়ান এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রুজিনাকে নিয়ে কিছু তথ্য বিভ্রাট মন্তব্য করে। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন সকালে রুজিনা কীটনাশক পান করে। তার অস্থিরতা ও বমিভাব মারাত্মক হওয়ায় ওই দিন সকালে মূমুর্মূ অবস্থায় তাকে পেকুয়া নুর প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। এ দিকে রুজিনার মৃত্যুর সংবাদ পান কিশোর রিদুয়ান। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকস্মিক ওই কিশোরও বিষপানে আত্মহত্যা করে।
তবে স্থানীয়রা এ ২ জনের বয়স পার্থক্য থাকলেও এদেরকে প্রেমিক জুটি হিসেবে দেখানো হচ্ছে। পেকুয়ার বিভিন্ন ফেইসবুক ওয়াল থেকে অনেকে আত্মহত্যার এ ঘটনাকে প্রেমিক জুটির আত্মহত্যা হিসেবে দেখছেন। আবার অনেকে এ কাহিনীকে ত্রিভূজ প্রেমের সমাধি হিসেবেও আখ্যায়িত করছেন। পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, লাশ দুটি উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।