বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পেকুয়ায় কাজে বঞ্চিত কর্মসৃজন প্রকল্পের ৫শতাধিক শ্রমিক

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া (কক্সবাজার)::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় শুরু হয়েছে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসৃজন কর্মসুচি প্রকল্পের কর্মসংস্থান বাস্তবায়ন কাজ। গত ১৯ আগস্ট উপজেলার সাত ইউনিয়নে এ কর্মসুচির কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

সরকার গ্রামীণ পর্যায়ে হতদরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থাণের জন্য এ প্রকল্প হাতে নেয়। একদিকে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন অপরদিকে কর্মক্ষম বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থাণের ব্যবস্থা করা সরকারের বৃহত এ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে পেকুয়ায়।

পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে কর্মসৃজন কর্মসুচি প্রকল্পের শ্রমিক রয়েছে ৩৯৮৬ জন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ১ম পর্যায়ে কাজে বঞ্চিত রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক। মৃত্যু বরণ করা, সরকারের অন্যাণ্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করা, প্রবাসি,নির্ধারিত বয়সের চেয়ে অতিরিক্ত বয়স হওয়াসহ নানা কারণে এবার তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ বাদ যাওয়া শ্রমিকের পরিবর্তে নতুন শ্রমিক অন্তর্ভুক্ত করার নিয়ম রয়েছে।

কর্মসৃজনের কাজ দশ দিন আগে শুরু হলেও এখনো নতুন শ্রমিক কাজে নেয়নি। ফলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী বলেন,তাঁর ইউনিয়নে ৫৫৮ জন শ্রমিক রয়েছে। তবে এবারের কাজে মৃত্যু বরণ,প্রবাসে থাকা, তালিকায় শ্রমিকের নাম আছে,অথচ কাজে না আসাসহ নানা কারণে প্রায় ৭০জন শ্রমিকের নাম কর্তণ করা হয়েছে। তাদের স্থলে নতুন শ্রমিকের নাম উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

রাজাখালী ইউপির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল বলেন, পূর্বের করা তালিকায় কিছুটা অনিয়ম হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, আত্মীয়করণ হয়েছে। তবে এটা আমার আগের চেয়ারম্যানের আমলে তালিকা হয়েছিল। ৫৫১জন শ্রমিকের মধ্যে আনুমানিক ৬০ জন শ্রমিকের নাম বাতিল করে তাদের জায়গায় নতুন শ্রমিক যোগ করা হবে। নতুন শ্রমিকের তালিকাও পিআইও অফিসে পাঠিয়েছি। কিন্তু পিআইও অফিস থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি।

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন,তেমন সমস্যা নেই আমার ইউনিয়নে। শ্রমিকরাও কাজে নিয়মিত আসছে। তাঁর ইউনিয়নে ৫৭২ জন শ্রমিকের মধ্যে ১০জন শ্রমিক পরিবর্তন হয়েছে। তবে ভিন্ন কথা জানালেন ইউপি সদস্যরা। তাঁরা জানান,তাঁদের স্ব স্ব ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৮-১০ জন করে শ্রমিকের নাম কর্তণ করা হয়েছে। বাদ যাওয়া শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করছেনা।

টইটং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,শুরু থেকে যারা কাজে আসেনি, যারা মৃত্যুবরণ করেছে এ ধরণের প্রায় ৫০-৬০ জন শ্রমিকের নাম তালিকা থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে।

জানাগেছে,কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই শ্রমিক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাবাবুরা।
সেসময় আত্মীয়করণ,স্বজনপ্রীতি, প্রবাসি,এমনকি মৃত ব্যক্তিদেরও শ্রমিকের তালিকায় চুড়ান্ত করা হয়।

জানাগেছে,পেকুয়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ নিয়ে নানা বির্তক জন্ম নিয়েছে। কাজে না গিয়েও হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখা, শ্রমিকের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ পাহাড়সম অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। টাকার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে শ্রমিক ও জনপ্রতিনিধির মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও নজির আছে।

পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু তাহের জানিয়েছেন,বাদ যাওয়া শ্রমিকের স্থলে নতুন শ্রমিকের যাচাই বাছাই চলছে। ভয়াবহ বন্যার কারণে তালিকা চুড়ান্ত করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে তালিকা চুড়ান্ত হবে। তাঁরা কাজেও যেতে পারবে।


আরো খবর: