শিরোনাম ::
বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে ৪ সংস্কার কমিশন দাবানলে আবাসন হারালেন হলিউড হিলের যেসব তারকারা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চাইলেন রুহুল কবির ব্রিটেনের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মেজর জিয়াউল আলিয়ার বিপরীতে ছবি করার প্রস্তাবে ‘না’ বলে দিলেন শাহরুখ, কিন্তু কেন? লস অ্যাঞ্জেলেসে প্যারিসের চেয়েও বড় এলাকা পুড়ে গেছে দাবানলে বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন চায় বিএনপি ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ডাকসু নির্বাচনের পরিকল্পনা প্রশাসনের ফিলিস্তিনিদের রক্তপিপাসু সেই হলিউড অভিনেতার বাড়ি দাবানলে পুড়ে ছাই
বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৮ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন মেজর জিয়াউল

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫


ঢাকা, ১৪ জানুয়ারি – ‘বিডিআর বিদ্রোহ’ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হামলায় নিহত হন ৫৭ সেনা কর্মকর্তা।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার নিয়ে ‘প্রহসন চলছে’ বলে অভিযোগ করেছেন ওই ঘটনায় চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও ভুক্তভোগীদের স্বজনরা। এ মামলায় এখনো কারাগারে আটক বিডিআর সদস্যদের মুক্তি ও ‘মিথ্যা মামলা’ বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ নিয়ে মঙ্গলবার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক আমার দেশ। সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান ও আবু সুফিয়ান তৎকালীন এক মেজর জিয়াউলের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। সেখানে উঠে এসেছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় আপনি কোন দায়িত্বে ছিলেন এবং আপনার ওয়ার্কিং স্টেশন কোথায় ছিল?

আপনারা কি বিশ্বাস করতেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত?

জবাবে জিয়াউল বলেন, এটা তো ঘটনার কদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়েছিল। যেসব অফিসার বেঁচে ফিরেছিলেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা ও ৪৬ ব্রিগেডসহ অন্যান্য ব্রিগেডের যেসব অফিসার পরে রিকভারির অপারেশনে গিয়েছিলেন, তারা এসব বিষয়ে পরবর্তী সময়ে অনেক তথ্য প্রকাশ করেছেন। সবার কাছ থেকেই ইনফরমেশন আমরা তখনই জানতে পারছিলাম।

এমনকি আমি যে বললাম, সেনাকুঞ্জে মিটিংটি হয়েছিল, সেখানেও সিনিয়র অফিসাররা বলছিলেন, চুপচাপ থাকো; কারণ অলরেডি ইনডিয়ান আর্মি-এয়ারফোর্স রেডি। সাবধানে কথা বলো। ইন্টারভেন (হস্তক্ষেপ) করার জন্য তারা রেডি। সুতরাং এই লেভেলের ভয় আমাদের তখনই দেখানো হয়েছিল।

জিয়াউল আরও বলেন, সেদিন সেনাকুঞ্জে ওই মিটিংয়েই একাধিক সিনিয়র অফিসার আমাদের বলতে লাগলেন, দেখ ভাই, আমাদের চুপ থাকতে হবে। বেশি কিছু করা যাবে না। বেশি উত্তেজিত হওয়া যাবে না। কারণ, ভারত তো অলরেডি তাদের এয়ারফোর্স রেডি করে রেখেছে। তারা কিন্তু যে কোনো সময় আসতে পারে। এটি হয়তো শেখ হাসিনাকে রেসকিউ মিশনের প্রস্তুতি ছিল তাদের।

সব অফিসারের সামনেই। এমনকি ক্যাপ্টেন সুহায়েল বা অন্য যে অফিসাররা ছিলেন আমাদের এ ঘটনার কোর্ট অব ইনকোয়ারিতে, যাচাই-বাছাই কমিটিতে, তারা অফিসিয়াল ফরমাল রিপোর্ট জমা দিতে পারেননি। ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসির স্যার ছিলেন একটি কোর্ট অব ইনকোয়ারিতে। কিন্তু তার মতামত তিনি দিতে পারেননি। ফাইনালি সেই কমিটি থেকে রিজাইন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন এই ইস্যু নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব।

এসব ঘটনায় বিক্ষুব্ধ অফিসারদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল?

এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়াউল বলেন, যেসব অফিসার এসব শোনার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেননি, প্রটেস্ট করেছেন, পতিত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি তর্ক করেছেন, তাদের অনেককেই পরে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। কাউকে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, যেসব অফিসার খুব অ্যাকটিভ ছিলেন, তাদের ডিজিএফআইতে নিয়ে গুম রেখে পায়ের নখ তুলে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে ভারতীয় ‘র’-এর অফিসাররা ছিলেন। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব সেনা অফিসার তথ্য দিচ্ছেন। এসব ঘটনা আমরা তখন থেকেই জানি।

সে ঘটনায় ভারতের ইনভলভমেন্ট খুবই ক্লিয়ার এবং সাম্প্রতিক সময়ে আমার ক্লাসমেট মেজর নুরের স্ত্রী গণমাধ্যমে বলেছেন যে, বিডিআর গণহত্যার সময় অনেকে হিন্দিতে কথা বলে যাচাই করেছে এটা ছেলে, নাকি মেয়ে। মানে মুসলমানের ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখবে না। তখন অনেকেই চাকরির ভয়ে বা প্রমোশনের ভয়ে কথা বলেননি। চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু সবাই তো আর চাকরির মায়া করেন না। সবাই তো আর গোলামির জীবন পছন্দ করেন না। যারা গোলামির জীবন পছন্দ করেন না, যাদের সাহস আছে, ব্যক্তিত্ব আছে, তারা কথা বলেছিলেন এবং তারা আলটিমেটলি সাফার করেছেন।

অভ্যুত্থান চেষ্টা ও গুম

কথিত ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জিয়াউল বলেন, সম্প্রতি আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমি পৃথক আবেদন জমা দিয়েছি। তাতে সেই দিনগুলোর পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছি। পিলখানার ঘটনায় ভারতীয় ফোর্স, বাংলাদেশের একদল বিশ্বাসঘাতক অফিসার এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ইনভলভ ছিল। এগুলো জানার পর যারা প্রতিবাদে মুখর ছিলেন, তাদের আলটিমেটলি একজন একজন করে বাহিনী থেকে আউট করা হয়।

আমরা যারা ভোকাল ছিলাম বা এক কথায় এ ঘটনা মেনে নিতে পারিনি এবং বাংলাদেশে ভারত রাজত্ব করবে ‘এটা আমরা যারা মেনে নিতে পারিনি, তাদের সবাইকে তারা আস্তে আস্তে তালিকাভুক্ত করে। এরপর ধীরে ধীরে আউট করার চেষ্টা করে। মাঝে আরও কিছু ঘটনাক্রম আছে।

আমাকে সাভার এলাকার আশপাশ থেকে অপহরণ করে ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টারে রাখে। দুদিন আমাকে রাখা হয় এবং বেশকিছু জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। যদিও আমি ইনফরমেশন ফ্লাডের মাধ্যমে তাদের কনফিউজড করে ফেলেছিলাম। সেখানে কিছুটা নির্যাতন করা হয়। নিজেকে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে কিছু পরিকল্পনা ছিল আমার। তাদের বলি, তথ্যসংবলিত একটি পেনড্রাইভ আমি সাভার বাজারের কাছে ফেলে এসেছি। সেটা বের করলে আরও তথ্য দিতে পারব। আমার ফলস ইনফরমেশন ফ্লাডিং দেখে ওরা ভেবেছিল আমি খুব হেলপফুল হয়ে গেছি। তারা আমাকে সাভারে নিয়ে যায়। সেখানে জনসমাগম ছিল আর আমি কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়ি।

জিয়াউল বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর ভারতের আধিপত্যবাদ যে জেঁকে বসেছে, সেটি অনেক অফিসার মেনে নিতে পারেননি। যারা মেনে নিতে পারেননি, তাদের ধীরে ধীরে আর্মি থেকে আউট করা হয়। আমরা কেউ কেউ ভাবছিলাম কীভাবে এই ভারতীয় প্রক্সি গভর্নমেন্ট থেকে দেশের স্বাধীনতাকে আবার উদ্ধার করা যায়। আমাদের হারানো স্বাধীনতা কীভাবে ফিরে পাওয়া যায়। আমাদের স্বাধীনতা ডিজিটালি চুরি হয়ে গিয়েছিল। আমি বলব, এটি আসলে ছিল ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’। যেহেতু এটা প্রক্সি সরকার ছিল, আমরা ডিজিটাল ইন্ডিয়া ছিলাম… ৩৬ জুলাইয়ের পর আমরা আলহামদুলিল্লাহ্ আবার অরিজিনাল বাংলাদেশ হয়েছি।

ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান এবং অপারেশন স্টিং

জিয়াউল বলেন, ভারতের পরিকল্পনাতেই সব কাজ চলছিল। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এটি পুরোটাই পরিষ্কার হয়ে যায়। তখন ডিজিএফআই ও ‘র’ মিলে একটি বড় স্টিং অপারেশনেরও চিন্তা করে। বাকি যে অফিসাররা আছেন, যারা দেশপ্রেমিক আর যারা টাকার জন্য নিজেদের বিকিয়ে দেননি বা যারা ভারতের হানিট্র্যাপে পড়ে যাবেন না— এরকম অফিসারদের আউট না করলে তো তারা বাংলাদেশকে এই যে ১৫ বছর শাসন করেছিল, তা করতে পারত না।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যদি তারা সেসব অফিসারকে হত্যা না করত, তাহলে তো ভারতের এই এজেন্সি রান করতে পারত না বাংলাদেশে। সুতরাং সেই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে অনেক অফিসারকে (প্রায় ৭০-৮০ জন) তাদের ফাঁদে ফেলে ফাঁসিয়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা তো আসলে ১০-১৫ জন অফিসার ছিলাম। আমার ইউনিটের একজন অফিসার ছিলেন লে. কর্নেল এহসান ইউসুফ। তার মাধ্যমে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি শিওর নই উনি সেই প্লটের অংশ কিনা। যদিও এটা নিয়ে বেশ কথা আছে।

কিন্তু আমি বেশ সন্দিহান যে, উনি নিজেই ডিজিএফআই ও ‘র’-এর পরিকল্পনায় কাজ করেছিলেন, নাকি নিজেই ফেঁসে গেছেন। ফাইনালি যেটা হয়েছে, সেই স্টিং অপারেশনের কারণে ওরা অনেককে ফাঁসিয়ে দেয় এবং এই স্টিং অপারেশনের পর বাকি সব অফিসারকে যখন ওরা কল করে, তখন আমাকেও লগ এরিয়াতে কল করে।

তখন আমরা বিষয়টি পাবলিকের কাছে নিয়ে আসা উচিত বলে সিদ্ধান্ত নিই। আমরা কিছু করতে পারিনি। আমরা চাচ্ছিলাম দেশকে কিভাবে উদ্ধার করা যায়; কিন্তু সেটা তো করতে পারিনি এই স্টিং অপারেশনের কারণে। আমরা তখনো ভারতীয় আধিপত্যবাদকে ঠিকঠাক বুঝতে পারিনি।

নিজেরাও তখন ইয়াং ছিলাম। তাদের পাওয়ার অনেক ছিল। আলটিমেটলি আমরা ফেইল করেছিলাম। পরে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আনার কারণে তারা বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিল। তখন পুরো দোষটা আমাদের অফিসারদের ওপর চাপানো হয়। আসলে বেশিরভাগ অফিসারকেই তারা তাদের ফাঁদে ফেলে ফাঁসিয়ে দেয়।

তাহলে কি সেটা অভ্যুত্থান চেষ্টা ছিল না?

এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়াউল বলেন, আমরা দেশের জন্য জীবন দিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু একই সময়ে ডিজিএফআই ও ‘র’-এর তরফ থেকে একটা ফাঁদ বা স্টিং অপারেশন চলেছিল। ফলে জিনিসটা (অভ্যুত্থান চেষ্টা) কীভাবে নস্যাৎ হয়ে গেল, এটা এখনও শিওর নই। এটা যাচাই-বাছাই করতে হবে। কারণ, আমি এখনও এনাফ ইনফরমেশন জানি না। বাকি সবার সঙ্গে যোগাযোগও নেই।

আত্মগোপনে যাওয়ার পর আপনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়-এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়াউল বলেন, এক কথায় বলা যায় ভারতীয় হেজেমনি প্লাস বিগত ফ্যাসিস্ট প্রক্সি সরকার এ দুটোর কমন একটা কার্ড ছিল ‘জঙ্গি কার্ড’। এটি ওয়ার অন টেররের কার্ড। এটি দিয়ে ওয়েস্টার্ন দেশগুলোর কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চেয়েছিল।

একই সময় বাংলাদেশে যত ইসলামিক দল আছে, তাদের যাতে চাপে রাখা যায়, এটা ছিল তাদের কৌশল। যত বেশি জঙ্গি মারতে পারবে, তত বেশি ইসলামিক দলগুলোকে চাপে রাখতে পারবে। জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম বা অন্যান্য যত ইসলামি দল আছে, তাদের বলতে পারবে ‘তোমরা জঙ্গি’- এটা বলে তাদের আটকে রাখা। এটা ছিল তাদের মূল কৌশল।

তিনি আরও বলেন, প্রেস কনফারেন্স করে তারা প্রথমে আমাকে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলেছিল। পরে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতা বলে প্রচার চালায়।

আপনাকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কারণ কী?

জিয়াউল বলেন, আমি যেহেতু আর্মিতে ছিলাম, তাই একজন আর্মি অফিসারকে যদি জঙ্গি ট্যাগ দেওয়া যায়, তাহলে পুরো আর্মিকে কিন্তু ব্যাশ ডাউন করা যায়। আর্মি অফিসার যারা আছেন, তারা যেন ধর্মীয় প্র্যাকটিস করতে না পারেন, যেমন নামাজ পড়া, রোজা রাখা, দাড়ি রাখা এসব বেসিক ধর্মীয় বিধান পালনের কাজগুলাকে নেগেটিভলি দেখা হতো সব সময়। আমাকে যত বেশি মিডিয়াতে ব্যাশিং করতে পারবে, তত বেশি আর্মিকে চাপে রাখা যাবে।

কোনো কোনো অফিসারের মুখে শুনেছি, কেউ একটু রিলিজিয়াস হলে তাকে বলা হতো তুমি কী জিয়াউলের মতো হতে চাও। এটা একটা ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামভীতি ক্রিয়েট করার কৌশল। একাধিক আর্মি অফিসারকে যদি জঙ্গি ট্যাগ দেওয়া যায় এবং বারবার মিডিয়াতে আনা যায়, একেকবার একেক দলের নামে ট্যাগ দেওয়া যায়, তাহলে বাইরের সব ইসলামপন্থি দলকেও চাপে রাখা খুব সহজ। আর আর্মির ভেতরে আর্মি অফিসার ও সৈনিক যারা আছেন, তাদের ধর্মীয় আচার-আচরণকেও নির্মূল করা সম্ভব এবং তাদের ইসলামভীতিতে রাখা যায়। তোমরা বেশি নামাজ পড়লে তোমাদের কিন্তু মেজর জিয়াউলের মতো অবস্থা করব ওদের জন্য এটা খুব সহজ ছিল।

জিয়াউল বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা স্তম্ভ মানুষের ইসলামি মূল্যবোধ এবং দেশপ্রেমিক ও ধর্মপ্রাণ সেনাবাহিনী দুটোকেই কিন্তু দুর্বল করা যায় এই জঙ্গি ট্যাগ বা ওয়ার অন টেররের বয়ানে। এভাবেই আমার ওপর একটির পর একটি ট্যাগ দেওয়া হয়েছিল।

যারা অভ্যুত্থান চেষ্টা করেছিলেন, তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়াউল বলেন, ৬০-৭০ জনকে তো ক্লোজ করা হয়। তাদের অনেকেরই পরে প্রমোশন হয়নি। পাঁচ-ছয়জনকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, তারা তো অনেক সাজানো মামলায় আমার নাম জড়িয়েছে। আমি আইনগত পদক্ষেপ নেব। আইনি লড়াই চলবে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার রাজনৈতিক মামলা রিভিউ করছে। সেখানে আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেছি। সেই আবেদনে আমি বিস্তারিত দেখিয়েছি। আমার মামলা যে রাজনৈতিক, সেই আবেদনে আমি তা পরিষ্কার করেছি।

সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ১৪ জানুয়ারি ২০২৫



আরো খবর: