কলকাতা, ০৯ জুলাই – পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রের ব্যালট লুট, ব্যালট বাক্সে আগুন, জল ঢালার অভিযোগও উঠেছে। ভোটের দিনেও হিংসা থামেনি মুর্শিদাবাদে।
শনিবার রাজ্যের ২২টি জেলার ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদের আসনে তিন স্তরের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন শুরু হয়। এতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ কোটি ৬৭ লাখ।
এদিন, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছে ৬৬.২৮ শতাংশ বলে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পড়েছিল ৫১.০৬ শতাংশ।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিন স্তরে অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথমদিনেই ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ভোটের দিনেও হিংসা থামেনি মুর্শিদাবাদে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে মারা গিয়েছেন পাঁচ জন। সেখানে দুই তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। নিহত এক কংগ্রেস এবং সিপিএম কর্মীও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে নিহত তৃণমূল কর্মী। কোচবিহারের ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটেরহাট ৪/৩৮ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মীর। মালদহের মানিকচকে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ইংরেজবাজারে বোমাবাজিতে নিহত তৃণমূল প্রার্থীর শাশুড়ি। নদিয়ার চাপড়ায় তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। গোয়ালপোখরেও শাসকদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় নিহত তৃণমূলের এজেন্ট।
যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ শনিবার দুপুরে জানান, ভোটের দিন তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রাজ্য পুলিশের বিষয় নির্বাচন কমিশনের কাজ ‘ব্যবস্থাপনা’। সেই কাজটা কমিশন করেছে। অশান্তির অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার এসপি, জেলাশাসককে জানিয়েছে।
মনোনয়ন পর্ব থেকেই রাজ্যে হিংসার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের সব ভোটকেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে বিরোধীরা দ্বারস্থ হন হাইকোর্টের। হাইকোর্ট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। জানায়, সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য রাখতে হবে। যদিও শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছেন, ৬০ হাজার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত এক চতুর্থাংশ ভোটেই তারা রয়েছে। তার পরেও হিংসার অভিযোগ থামেনি।
সূত্র: জাগো নিউজ