টেকনাফে বিজিবি ও র্যাব-৭ এর সদস্যরা পৃথক অভিযান চালিয়ে ১লক্ষ ২৯ হাজার ২শ পিস ইয়াবাসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে । এসময় ২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৭শ কেজি অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
সোমবার বিকালে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের ফেয়ারিঘাট ব্রিজের পাশ থেকে মো. আইয়ুব নামে এক ব্যক্তিকে ইয়াবাসহ আটক করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।
তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে সমুদ্র পথে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পাচারের জন্য টেকনাফে মজুদ রেখেছে কিছু মাদক ব্যবসায়ী। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের পশ্চিম পাশের ফেয়ারিঘাট ব্রীজ এলাকায় একটি অভিযানে পরিচালনা করে মহেশখালী গোরকঘাটা চরপাড়া এলাকার মৃত কাছিমের ছেলে মো. আইয়ুবকে ২০হাজার ইয়াবাসহ আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে একটি বাড়ির মাটির নিচ থেকে ৫৯ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এসব ইয়াবার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ।
এছাড়া টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান,একই দিনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, পৃথক দুটি অভিযানে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ উপজেলার জীম্বংখালী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-১৫ থেকে আনুমানিক ৮০০ গজ পশ্চিমে ঢাকাইয়া প্রজেক্ট এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান লবণের মাঠে মাটির ভিতর লুকায়িত রয়েছে। উক্ত লবণ মাঠের কর্মী মোঃ রফিক (২০), পিতা-মোঃ আনোয়ার, গ্রাম-হাকিমপাড়া, ডাকঘর-বালুখালী, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার ঢাকাইয়া ঘেরে যায়। এরপর ভারপ্রাপ্ত অপারেশন অফিসার লেঃ এম মুহতাসিম বিল্লাহ (শাকিল) এর নেতৃত্বে একটি টহলদল বর্ণিত স্থানে গমন করে ফাঁদ পেতে অবস্থান গ্রহণ করে। ঢাকাইয়া ঘের লবণ মাঠে থাকা ব্যক্তির চলাচল সন্দেহজনক হওয়ায় লবণ মাঠ হতে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত ব্যক্তিকে মাদক পাচারের ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে অস্বীকার করে। পরে তাকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে লবণের মাঠে মাটির ভিতর লুকানো অবস্থায় ইয়াবা ট্যাবলেট রয়েছে বলে স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্যমতে ঢাকাইয়া প্রজেক্ট সংলগ্ন লবনের মাঠে মাটির নীচে লুকায়িত অবস্থায় একটি পলিথিনের ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ব্যাগের ভিতর হতে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করতে সক্ষম হয়। ধৃত আসামীর স্বীকারোক্তিতে উক্ত মাদক পাচারের সাথে আরো দুইজন মাদক ব্যবসায়ি জড়িত রয়েছে বলে জানায়।
অপরদিকে, ২কোটি ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৭০০ কেজি অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। ব্যাটালিয়নের নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ শীলখালী অস্থায়ী চেকপোষ্ট হতে আনুমানিক ৪ কিঃ মিঃ উত্তরে শ্যামলাপুর বাজারে একটি গুদামে অবৈধ চোরাচালানী মালামাল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে লুকায়িত রয়েছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সদর হতে ভারপ্রাপ্ত অপারেশন অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহলদল দ্রুত বর্ণিত স্থানে গমণ করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উক্ত গুদাম ঘরে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করা হয়। তল্লাশীর এক পর্যায়ে গুদাম ঘরের মধ্য হতে ২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা মূল্যের ২ হাজার ৭শত কেজি অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, উক্ত গুদাম ঘরের মালিক গুদামে হাজির না থাকায় গুদাম ঘরের মালিক কিংবা পাচারকারীদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে উক্ত গুদাম ঘরের মালিককে আটকের নিমিত্তে অভিযান পরিচালনা করা হলেও তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পলাতক আসামীকে আটকের নিমিত্তে অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জব্দকৃত অবৈধ কারেন্ট জালগুলো নিজ দখলে রাখার দায়ে গুদাম ঘরের মালিককে পলাতক আসামী দেখিয়ে উদ্ধাকৃত কারেন্ট জালগুলো টেকনাফ শুল্ক গুদামে জমা করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলা দেয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আটককৃত আসামী এবং পলাতকদের বিরুদ্ধে জব্দকৃত ইয়াবাসহ নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। সিবিএন