কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় একটি কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল নোট, জাল টাকা তৈরীর সরঞ্জামসহ সিন্ডিকেটের মূলহোতা সাইফুদ্দিনসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-৭।
রোববার (২৮ মার্চ) বিকাল সোয়া ৪টায় কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ গেইটের বিপরীতে মঞ্জুর কমপ্লেক্সের নিচ তলায় কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় ওই দোকানের ভেতর থেকে জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত থিংকপ্যাড, ল্যাপটপ, নোটপ্যাড, এলইডি মনিটর, কালার প্রিন্টার, ফটোকপি প্রিন্টারসহ ১৬ লাখ টাকা উদ্ধার করে র্যাব।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানার মনোহরখালী গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর ছেলে মো. ছাইফুদ্দীন আহাম্মদ ওরফে মিজান (৫০), মো. মিসবাহ্ উদ্দিন (৩২), মো. জিয়াউদ্দিন (২০) ও কক্সবাজারের কৈয়ারবিল এলাকার ওমর আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৪)।
র্যাব জানায়, আটক মো. ছাইফুদ্দীন আহম্মদ ওরফে মিজান এই অবৈধ জাল নোট সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার সহযোগী সাইফুল ইসলাম কম্পিউটার বা ল্যাপটপে জাল টাকাগুলো প্রস্তুত করে কালার প্রিন্টারে প্রিন্ট করতো। মিসবাহ্ উদ্দিন জাল টাকাগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় আসল টাকা হিসেবে তাদের চক্রের নির্ধারিত লোকের মাধ্যমে চালানোর ব্যবস্থা করতো।
অন্যদিকে মো. জিয়াউদ্দিন জাল টাকা প্রস্তুতের সময় পাহারা দিত যাতে কেউ তাদের এই অবৈধ জাল টাকা তৈরির কাজের ব্যাপারে জানতে না পারে। টাকা ছাপানোর পর তারা নির্ধারিত লোকের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিত। জনগণকে ফাঁকি দিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনই ছিলো তাদের মূল লক্ষ্য। এই জাল টাকা ব্যবহার করে তারা মায়ানমার থেকে অবৈধ পথে মাদকদ্রব্য এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় করতো বলে স্বীকার করেছে।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালনোট তৈরি চক্র। রবিবার আমরা খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের মূলহোতাসহ তার তিন সহযোগিকে আটক করি।
শহর এলাকায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অধিক তৎপরতা থাকায় তারা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হিসেবে কুতুবদিয়া এলাকাকে জাল টাকা ছাপানোর জন্য নির্বাচন করেছে। সেখান থেকে তারা তাদের লোকের মাধ্যমে জালনোটগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাজারে ছড়িয়ে দিত। এই জাল টাকা দিয়ে তারা মাদক-অস্ত্র কিনতো। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কুতুবদিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।