কক্সবাজারে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে বিএনপির জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক হুইপ কমল ও সংসদ আশেকসহ ৫১ জনের নাম উল্লেখ্য করে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান।
মামলায় আসামিরা হলেন— সদর-রামু আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শাল, কক্সবাজার পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আাসনের সাবেক সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদ মিয়া, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল, যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, পৌর যুবলীগের সভাপতি ডালিম বড়ুয়া, পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন সেতু, হেলাল উদ্দীন কবির, সাহাব উদ্দিন সিকদারসহ ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০/২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ্য করেছেন, গত ৪ আগস্ট কোটাসংস্কার বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করছিল। সেসময় ১ নম্বর ক্রমিকের আসামি সাইমুম সরওয়ার কমল ও ২ নম্বর ক্রমিকের আসামি মুজিবুর রহমান তাদের সন্ত্রাসীদের জেলা কার্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পেয়ে আসামিরা যথাক্রমে মোনাফ সিকদার, মারুফ আদনান ও জাফর আলম ও অন্যান্য আসামিরা কিরিচ দিয়ে কার্যালয়ের বিপুল আসবাবপত্র কেটে ফেলে এবং এস এম সাদ্দাম হোসেন ও মঈন উদ্দিন মঈনসহ কয়েকজন মিলে হাতে থাকা পেট্রোল ও গান পাউডার কার্যালয়ের ভিতরে ছিটিয়ে দিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্র ও লাইব্রেরির গচ্ছিত বই পুড়ে গিয়ে অনুমানিক ত্রিশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে বিএনপির এই কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একাধিকবার হামলা ও ভাঙচুর করেছে। কিন্তু তারা থানায় মামলা করতে পারেননি। উল্টো বিভিন্ন গায়েবি মামলায় দলের নেতা-কর্মীদের আসামি করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। বিএনপি কার্যালয়ে সেদিন যারা ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, আসামিদের কেউ এলাকায় নেই। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, ১৭ আগস্ট রাতে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ারসহ আওয়ামী লীগের ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। ৪ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ২৫ বছর বয়সী অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনার ১৩ দিন পর হত্যা মামলাটি করেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া। গতকাল পর্যন্ত গুলিতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।