কক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন৷ রোগীবাহী মাইক্রোাবাস ও কক্সবাজার গামী শ্যাামলী পরিবহন বাসের সাথে মুখোমুখি এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০/১২ জন। এদের মাঝে ঘটনাস্থলে দু’জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও তিনজন।
গতকাল সোমবার বেলা ১২ টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দঈদগাঁওয়ের খোদাইবাড়ি এজি লুৎফুর কবির আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে ৪ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, আবু আহমেদ, পিতা- মৃত মফিজুর রহমান, গ্রাম- ইলশা পুরাতন বাড়ি, ৭নং ওয়ার্ড বাহারছড়া, মাহমুদা বেগম, স্বামী-মৃত মাহবুবুল আলম, গ্রাম- পশ্চিম ইলশা, ৮নং ওয়ার্ড, বাহারছড়া, সায়রা খাতুন, স্বামী -আব্দুল কুদ্দুস, গ্রাম-ডোংরা, চৌকিদার বাড়ি, খানখানাবাদ, দুলা মিয়া, পিতা- গোলাম সোবহান, গ্রাম- কুফিয়া ডোংরা, ৬ নং ওয়ার্ড, খানখানাবাদ। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত ও আহত সকলের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়।
তারা গত ৮ দিন থেকে বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
জানা গেছে, বাঁশখালীর বেশকিছু অসুস্থ রোগী চোখের সমস্যা নিয়ে গত ৮ দিন আগে শহরের বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসা শেষে গতকাল সোমবার তিনটি মাইক্রোবাস যোগে গ্রামের বাড়ি বাঁশখালী ফিরছিলেন। দুটি মাইক্রো চলে গেলেও একটা দূর্ঘটনার কবলে পড়ে পড়ে। ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে ঘটনাস্থলে দু’জন মারা যায়। সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আর-ও তিনজনের মৃত্যু হয়। বাকীরা সবাই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আর-ও দুই জনের অবস্থা আশংকামুক্ত নয় বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চকরিয়া মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বরত ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মো. মোজাম্মেল হক জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও খোদাইবাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তারা মরদেহ উদ্ধার ও দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো জব্দ করে মালুমঘাট হাইওয়ে থানায় নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, গাড়িটি পুলিশের হেফাজতে আছে। চালক পালিয়ে গেছে৷
ঈদগাঁও থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা জানান, বেলা ১২ টার দিকে শ্যমলী পরিবহনের সাথে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুজন মারা যায়।
কক্সবাজার বায়তুশ শরফ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা সহায়ক কর্মকর্তা নেছার আহমদ জানান, বাঁশখালীর ২৬ জন রোগী চোখের চিকিৎসা শেষে সোমবার বেলা ১২ টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝপথে ঈদগাঁ উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। তাদের চিকিৎসার খবরাখবর নিতে বায়তুশ শরফ হাসপাতালের লোকজন সদর হাসপাতালে রয়েছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, ঈদগাঁওতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কয়েকজন নারী-পুরুষকে বেলা একটার পর হতে পৃথক সময়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। এদের মাঝে এক নারী ও এক পুরুষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাসপাতালে আনার আগে মারা যান আরও একজন৷
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, মাইক্রোবাসে ১৪ জন যাত্রী ছিলো। চট্টগ্রামগামী শ্যমলী পরিবহন মাইক্রোবাসটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে দু’জন মারা যায়।
উল্লে খ্যা, বিগত কিছুদিন আগেব বাহারছড়া রত্নপুর উচ্চ বিদ্যািলয়ে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাোম্প অনুষ্ঠিত হয়। তাতে যাদের চোখে ছানি পড়েছে তাদের পৃথকভাবে ছানি অপারেশন ও চিকিৎসা করার জন্যম বাঁশখালী থেকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শুক্রবারে। তাদের চিকিৎসা শেষে আজ সোমবার ফিরে যাওয়ার পথে এ দুঘর্টনা ঘটে বলে জানা যায়।