শিরোনাম ::
পেকুয়ায় দুই হাজার একর জমিতে লবণ চাষ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা উখিয়ায় কৃষকদলের সমাবেশে প্রান্তিক কৃষকদের মূল্যায়ন করার দাবী মহেশখালীতে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আলোচিত জিয়াসহ আটক-২ চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদিসহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার, মাদক বিক্রেতা গ্রেফতার উখিয়ার মেরিন ড্রাইভে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় অস্টেলিয়ান নাগরিক নিহত বান্দরবানে যক্ষা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে শিক্ষকদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা মিয়ানমার থেকে বিপুল ইয়াবা ও অস্ত্র-গুলি আনার সময় জব্দ,এক ডাকাত আটক মহেশখালীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১০ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশী অস্ত্র-গুলিসহ ৩ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ইউনিয়ন ব্যাংকের ‘নিখোঁজ’ এমডি বাসা ছেড়েছেন, পড়ে রয়েছে দুই দামি গাড়ি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪

[ad_1]

ঢাকা, ২২ অক্টোবর – রাজধানীর অভিজাত এলাকার বনানী থানা থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে একটি বহুতল ভবনে নিজের কেনা ২ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে থাকতেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী। তার দুই ছেলে-মেয়েই স্কুলপড়ুয়া। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মোকাম্মেল হক নিজে ব্যবহার করতেন টয়োটার প্রাডো মডেলের একটি গাড়ি। পরিবারের সদস্যদের জন্য ছিল একটি মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়ি।

আর গত সোমবার থেকে ব্যাংকের পরিচালকদের চোখে তিনি নিখোঁজ। তবে বনানীতে তার বাসার নিচে পড়ে রয়েছে দুটি গাড়ি। এদিকে, ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালকেরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে বিষয়টি জানানোর পর বুধবার রাতেই উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শফিউদ্দিন আহমেদকে এমডির চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ইউনিয়ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী সূত্রে জানা গেছে, তার বাসায় বাইরের লোকজন তেমন একটা আসতেন না। তবে মাঝে মধ্যে মোকাম্মেল হক চৌধুরীর শ্যালক ও শাশুড়ি আসতেন বলে ভবনে কর্মরত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে জানা গেছে। নিজে নিরুদ্দেশ হওয়ার আগে পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সোমবার দুপুরেই তার স্ত্রী নাজনীন আকতার দুই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বাসা ছাড়েন। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলোচিত এই ব্যাংকার নীরবে বাসা থেকে একা বের হয়ে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মোকাম্মেল হক চৌধুরীকে আর দেখা যায়নি। বুধবার তিনি কাজেও যোগ দেননি।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে বনানীতে তার বাসায় খোঁজ নিতে গেলে ওই ভবনের ব্যবস্থাপক মাসুম বিল্লাহ বলেন, উনারা (মোকাম্মেল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী) কাউকে কিছু জানিয়ে যাননি। সোমবার দুপুরে পরিবারের সদস্যরা ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি বের হয়ে গেছেন। এরপর আর বাসায় ফেরেননি।

ভবনের কর্মচারীরা জানান, সোমবার দুপুরে তার স্ত্রী দুই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বাসা ছাড়েন। মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়িটি তাদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়। বাসার গৃহকর্মীদের এর আগেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে গাড়িটি বাসার গ্যারেজে পড়ে রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টয়োটা প্রাডো গাড়িতে বাসায় ফেরেন মোকাম্মেল হক চৌধুরী। এরপর সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে গাড়ি ছাড়াই বাসা থেকে একা বের হয়ে যান। গাড়ির চালক বাসার নিচে অপেক্ষা করলেও তাকে কিছু জানাননি। এর পর থেকে দুই গাড়ির চালক মাঝেমধ্যে ওই ভবনের নিচে আসছেন, কিন্তু নিয়োগদাতার সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না।

ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান, গত মঙ্গলবার সর্বশেষ বার ব্যাংকে গিয়েছিলেন মোকাম্মেল হক চৌধুরী। তবে বেশি সময় তিনি সেখানে ছিলেন না। বিকেলের দিকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দেয়া কিছু ব্যক্তি তার সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তিনি ব্যাংক ছেড়ে চলে যান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২৭ আগস্ট বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নতুন পর্ষদের সদস্যদের অভিযোগ, ব্যাংকটিতে এস আলমের প্রভাব এরপরও কমেনি। এমডি মোকাম্মেল হকের অসহযোগিতার কারণে তারা ব্যাংকটির অবস্থার বিষয়ে সঠিক তথ্যও পাননি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন ব্যাংকের একটি রহস্যময় হিসাব থেকে নগদ টাকা উত্তোলন ও মোকাম্মেল হক চৌধুরীর নিজের হিসাব থেকে তার গচ্ছিত পুরো অর্থ তুলে নেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন বলা হয়, দেশের আরও কয়েকটি ব্যাংকের মতো ইউনিয়ন ব্যাংকের মালিকানা ছিল এস আলম গ্রুপের হাতে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকটির মোট ঋণের মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা বা ৬৪ শতাংশই নিয়েছে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে কাল্পনিক লেনদেনের মাধ্যমে, যার বিপরীতে জামানতও নেই। আবার ব্যাংকটির মোট ঋণের ৪২ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে বলে ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়েছিল, খেলাপি ঋণের হার ৪ শতাংশের কম।

আরও জানা গেছে, এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংক দখল করে লুট ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে বিশেষ সুবিধা পাওয়া অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এর পাশাপাশি মোকাম্মেল হক চৌধুরী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগর প্রধান হারুন অর রশীদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। এ কারণে ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টে গচ্ছিত টাকার হিসাবে গরমিলসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, সাইফুল আলমের হয়ে তার ছেলে আহসানুল আলম, জামাতা বেলাল আহমেদ, তার ব্যক্তিগত সচিব ও ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দিন ও ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অপরাধ করেছেন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১১ অক্টোবর ২০২৪

[ad_2]


আরো খবর: