[ad_1]
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর গাবতলীর ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ারে ৮ বস্তা নিষিদ্ধ চায়না জালের একটি চালান জব্দ করেছে দারুসালাম থানার সাব ইন্সপেক্টর জুয়েল।
মঙ্গলবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জব্দ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে “ইউএসবি এক্সপ্রেসের” একাধিক সূত্র।
আরও পড়ুন: আগুনে পুড়লো ২ দোকান
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪.১৯ মিনিটে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, (মাধবপুর-ঢাকা) (ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উদ্দেশ্যে ৮টি সাদা বস্তায় প্রায় ৭০মন নিষিদ্ধ চায়না জাল বুকিং দেওয়া হয় “ইউএসবি এক্সপ্রেস” কুরিয়ারের মাধবপুর শাখায়। বুকিং দেয়ার সময় বস্তার পণ্যটিকে “সুতা” বলা হয়। যার প্রেরক এবং প্রাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম। এর পরের দিন ঢাকা মেট্রো-১২-১৯৪৬ নাম্বার গাড়িতে করে পণ্যটি রাজধানী গাবতলীর মাজার রোডের কবরস্থান সংলগ্ন ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ারে এসে পৌঁছালে বস্তা গুলো “হোল্ড” করা হয় বলেন ইউএসবি এক্সপ্রেসের মাধবপুর এবং ঢাকার কর্মরত ছোট বড় একাধিক কর্মকর্তা।
এই বিষয়ে মোঃ শফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে এ পন্যটি তার এবং এটি নিষিদ্ধ চায়না জাল বলে আমাদের নিশ্চিত করেন। এটি নিষিদ্ধ জেনেও আনেকেই করছে তাই তিনিও করছেন বলে দাবি করেন। এই জাল “ইউএসবি এক্সপ্রেস” এর মাধ্যমেই আরো একাধিকবার আদান প্রদানের কাজ করেছেন যার বুকিং স্লিপ তার কাছে আছে বলেও জানান। ঢাকা এসে কাগজগুলো আমাদের দেখাবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এই বিষয়টি নিয়ে “ইউএসবি এক্সপ্রেস” কুরিয়ারের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে গেলে, প্রথমেই আমরা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকি এবং কি কারণে বস্তা গুলো “হোল্ড” করে রাখা হয়েছে? আর এখন পর্যন্ত কোন কারনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়নি? তা জানতে চাই।
এই প্রশ্নের জবাবে ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ারের কর্মকর্তা মোঃ জীবন এবং মোঃ আবু তাহের বলেন, বস্তা প্রতি বুকিং খরচ কম দেয়া হয়েছে বলেই এই পন্যটি “হোল্ড” করে রাখা হয়েছে। এরপর আমাদের কাছে সুস্পষ্ট তথ্য আছে যে, বস্তার পন্যটি নিষিদ্ধ চায়না জাল। এই প্রশ্ন শুনেই তারা আমাদেরকে নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন করতে থাকেন। এর পরে মোঃ জীবন নিজেকে এ প্রতিষ্ঠানের মালিকের ভাই এবং একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেও জানান এবং এই প্রতিষ্ঠানের “সি.ই.ও” ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের বড় ভাই লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসর) মোঃ মাইনুল ইসলাম বলে জানান। এ সময় তারা তাদেরই গনমাধ্যম “ঢাকা পোস্ট”এর সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন এবং আমাদের সাথে কথা বলতে বলেন। পরে মহিউদ্দিন সরকার আমাদের কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন করেন। তিনি পরিচয় নিশ্চিত হয়ে এই বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মাদকসহ গ্রেফতার ২
উর্ধ্বতন এই ২ কর্মকর্তা মোঃ জীবন এবং মোঃ আবু তাহেরের একাধিক ফোন পেয়েও সেদিন দারুসসালাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির আরেক কর্মকর্তা মোঃ তানভীর আমাদের বলেন, যেহেতু আমরা জাল খুব ভালো চিনিনা তাই আগামীকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এই বস্তা গুলো খোলা হবে।
আপনারা কেন এই পন্য বহন করেন? এই প্রশ্নের জবাবে মোঃ তানভীর বলেন, কুরিয়ারের আইনে কোথাও লেখা নেই এই পন্য বহন করা যাবেনা। তাছাড়াও আমরা এখনও জানিনা এটি সাধারণ জাল নাকি নিষিদ্ধ চায়না জাল। কথা শেষে মোঃ জীবন, মোঃ আবু তাহের, মোঃ তানভীর এবং সাথে আরো কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় আমরা “হোল্ড” করে রাখা বস্তা গুলোর ভিডিও চিত্র ধারণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২.৪৪ মিনিটে দারুসালাম থানার সাব ইন্সপেক্টর জুয়েল, মুঠোফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এ সময় তিনি আমাদের পরিচয় জানতে চায় এবং হুমকির সাথে আমাদের বাড়ির ঠিকানা (বাসা কোথায়) বলেন।
আরও পড়ুন: কারাগারে রাশেদ খান মেনন
আমারা তাকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করি এবং গতকাল তারা কেনও আসেনি জানতে চাই? এই প্রশ্নের জবাবে,তিনি এখন “ইউএসবি এক্সপ্রেস”কুরিয়ারেই উপস্থিত আছেন বলে জানান। পরে আর কোন কথা না বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। তার পরে তাকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হরেও তিনি আর যোগাযোগ করেন নি। তবে কিছু সময় পর “ইউএসবি এক্সপ্রেস” কুরিয়ারের কর্মকর্তাগণের মাধ্যমে জানাতে পারি যে, মোঃ শফিকুল ইসলাম এবং তার নিষিদ্ধ চায়না জাল আটক করেছে সাব ইন্সপেক্টর জুয়েল। এই বিষয়ে “ইউএসবি এক্সপ্রেসের” পক্ষ থেকে এডমিন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
সান নিউজ/এমএইচ