গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের মহেশখালী::
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে জলদস্যুর আস্তানায় মহেশখালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি অগ্নিঅস্ত্রসহ ৩ জলদস্যু গ্রেপ্তার এবং ১৬ মাঝিমাল্লা’কে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এসময় জলদস্যুদের কাছ থেকে ২টি একনলা বন্দুক, ১টি এলজি, ২টি ধারালো কিরিচ, ১টি দা, ১০টি মোবাইল ফোন, ২টি হাতঘড়ি, ফিশিং বোটের ইঞ্জিনের সেল্ফ উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে ১৬ মাঝিমাল্লা’কে সোনাদিয়া চ্যানেল থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত জলদস্যুরা হলো- কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাটা গ্রামের জৈনিক জাফরের পুত্র মোঃ কায়সার (১৯), আবদুল মালেকের ছেলে সোনা মিয়া (১৯) এবং ঘটিভাঙ্গা গ্রামের মকবুল আহমদের ছেলে তারেক (২৬)।
০১ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাত ৩টার দিকে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গায় জলদস্যুদের আস্তানা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আত্মসমর্পণকৃত সোনাদিয়া জলদস্যু মঞ্জুর পুলিশের অভিযানে উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।
কক্সবাজারের নাজি রার টেক থেকে ১৬ মাঝিমাল্লা সহ মহেশখালী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড ঘোনাপাড়া এলাকার জৈনিক মোজাম্মেল হক বহদ্দারের মালিকানাধীন মাছধরার ট্রালার (এফ-বি ভাই ভাই ৩) ১৬ জন মাঝিমাল্লা সহ গত ৩০শে জানুয়ারী ভোর আনুমানিক ৪ টা থেকে হঠাৎ নিখোজ হয়ে যায়।
ট্রলারটির মালিক মোজাম্মেল হক বহদ্দার জানান- গত ১২ দিন আগে তার মালিকানাধীন মাছধরার ২টি ট্রালার (এফবি-ভাই ভাই ২ এবং এফবি-ভাই ভাই ৩) মাছ আহরণের জন্য বঙ্গোপসাগরে উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
গতকাল ৩০ জানুয়ারী সোমবার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে মাছ নিয়ে ট্রলার দুইটি কক্সবাজার নাজিরার টেক সমুদ্র পয়েন্টে মাছ নামিয়ে দিতে আসে।
পরক্ষনে ওই ট্রলার দুইটিতে থাকা মাছ ধরার মাঝি মাল্লারা মোজাম্মেল বহদ্দারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ভোরে কক্সবাজার নাজিরার টেক সমুদ্রে পয়েন্টে যাবেন এবং মাছগুলো বিক্রি করার জন্য ফিশারী ঘাটে নেবেন এই মর্মে মোটোফোনে আলাপ শেষ হয় তাদের মধ্যে।
একই দিন ভোর আনুমানিক চার ঘটিকার সময় ওই ট্রলার দুইটির মালিক মোজাম্মেল বহদ্দার কক্সবাজারের উদ্যোশ্যে রওয়ানা দেওয়ার সময় দুইটি ট্রলারে থাকা মাঝিমাল্লাদের সাথে মোটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে (এফবি-ভাই ভাই ২) এর সাথে কথা হয় এবং (এফবি-ভাই ভাই ৩) এ থাকা মাঝিমাল্লাদের মোটোফোনে আর কোনভাবেই সংযোগ পাওয়া যায়নি। নিখোজ হওয়া ট্রলারে আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকার ইলিশ মাছও ছিল বলে জানান তিনি।
গত একমাস থেকে গভীর সমুদ্র সহ উপকুলের আশপাশে পেশাদার জলদস্যুদের মহড়া ক্রমান্নয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন সমুদ্র পয়েন্টে ট্রলার ডাকাতির ঘঠনা হয়েছে।
একইদিনে ফিশিং ট্রলার মালিক কক্সবাজার মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী দায়ের করেন।
এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
গ্রেপ্তার ডাকাতরা বোটটি ডাকাতি করেছে বলে স্বীকার করে এবং তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ওই ট্রলারের ১৬ জন জেলেকে সোনাদিয়া চ্যানেল থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মহেশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর আবদুর রাজ্জাক বলেন- পুলিশ তথ্যপ্রযোক্তি ব্যবহার করে মঞ্জুর ডাকাতের আস্তানা থেকে অস্ত্রসহ তিন ডাকাতকে আটক করা হয়।