উখিয়ার পালংখালীর থাইনখালী ও মুছারখোলা বনবীট এলাকায় পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে বন বিভাগ।
এ সময় স্তুপকৃত বালু, মাটি ও একটি ডাম্পার গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। তবে এতে জড়িত কেউ আটক হয়নি।
পাহাড় কাটার মাটি ও বালু যাতে অন্যত্র সরাতে করতে না পারে, সেজন্য লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) অভিযান চালায় বন বিভাগ।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারোয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে পাহাড় কাটা বন্ধে শনিবার অভিযান চালানো হয়েছে। এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর আগেও পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন বিভাগ।’
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ পাহাড়খেকোরা ওই এলাকায় সশস্ত্র পাহারা লাগায়। সিসি ক্যামেরা বসিয়ে একের পর এক সরকারি পাহাড় কেটে বালু ও মাটি বিক্রির জন্য স্তুপ করছিল।
বন কর্মীদের তথ্যমতে, অন্তত ১০ টি পয়েন্টে পাহাড়খেকোরা কয়েক কোটি টাকা আয়ের হিসাব করে বিক্রির জন্য স্তুপ করেছিল পাহাড়ী মাটি ও বালু।
এই চক্রের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দশটি মামলা রয়েছে। যারা আসামি অর্ধশতাধিক।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া বন কর্মকর্তা গাজি শফিউল আলম বলেন, ‘স্বল্প সংখ্যক বন কর্মীর দল নিয়ে শনিবার পাহাড়কাটার পয়েন্টগুলোতে গিয়ে দ্রুত লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দিই। এরকম ১০ টি পয়েন্ট পেয়েছি। পাহাড়গুলো কেটে ১০ টি স্থানেই পাহাড় সমান স্তুপ করে রাখা হয়েছে বালু ও মাটি।’
কতটি পাহাড় কাটা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোন চিহ্নও না থাকায় সঠিকভাবে বলা মুশকিল। পাহাড়ের কাটা মাটিতে লবণ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। লবণ মিশানো মাটি এবং বালু অন্যত্র ব্যবহার করা যায় না। একারণেই তা করা হয়েছে। পাহাড় কাটায় নিয়োজিত লোকজনের বিরুদ্ধে ১০ টি মামলাও করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা সবাই পাহাড় নিধনের ঘটনায় জড়িত স্থানীয় লোকজন।
বন কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সংঘবদ্ধ এসব ব্যক্তিগণ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসিয়ে এবং সিসি ক্যামেরার সাহায্যে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার লোকজনের গতিবিধি নজরে রেখে দীর্ঘদিন ধরে এমন অপকর্ম করে আসছে।’
ভুক্তভোগী লোকজন জানিয়েছে, অব্যাহত পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ এলাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ফেসবুক আইডিতে প্রচুর লেখালেখি করেছে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের প্রতিবাদ জানিয়েছে। যে কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর, বনকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অভিযান চালাতে বাধ্য হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে, বনভূমি নিধন ও পাহাড় কাটায় নেতৃত্ব দিচ্ছে দুইজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা শক্তিশালী হওয়ায় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেনা বন বিভাগ। উল্টো এলাকার সাধারণ মানুষ বন মামলার আসামি হয়।
যারা এসবের নেপথ্যে রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।