শিরোনাম ::
খুনিদের গোড়া থেকে নির্মূল না করলে আবার ষড়যন্ত্র করবে রোহিঙ্গা তরুণদের ‘ইয়ুথ মুভমেন্ট ফর আরাকান’ এ স্বদেশ ফেরার আকুতি বাংলাদেশের তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করতে আগ্রহী বিশ্বব্যাংক চকরিয়ায় মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত চকরিয়া পেকুয়ার প্রবাসি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকল্পে হেল্পডেক্স চালু সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ চকরিয়ার সাহারবিলের জেলে কমল সেন নায়িকা পরীমণির প্রথম স্বামী নিহত: যা জানালো পুলিশ ডেঙ্গু কেড়ে নিলো আরও ১০ জনের প্রাণ ক্ষমতার ভারসাম্য, একজন দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় ঘুমধুম সীমান্তে ইয়াবা নিয়ে বাংলাদেশি-রোহিঙ্গাসহ ৪ মাদক চোরাকারবারি আটক
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

মাতারবাড়ী দ্বিতীয় বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করল জাপান

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২

মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দ্বিতীয় প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়িয়েছে জাপান। গতকাল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিকারিকো উনো এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিলে তার সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। কেবল বাংলাদেশে নয়, একই সময়ে ইন্দোনেশিয়ার একটি কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিলের কথাও এ সময় জানানো হয়।

দেশটির গণমাধ্যমগুলো বলছে, মূলত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী নানা সমালোচনা সৃষ্টি হওয়ায় এসব প্রকল্পে আর বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার। কেননা জীবাশ্ম এ জ্বালানিটিই সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের জন্য দায়ী। গত বছরই জি৭ জোটভুক্ত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে কয়লা পোড়ানো প্রকল্পগুলো থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। জোটভুক্ত দেশ হিসেবে জাপানের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলনই ঘটেছে মাতারবাড়ী প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে।

কয়লাভিত্তিক মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রথম ধাপ বাস্তবায়নকারী তিনটি ইপিসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি সুমিতোমো করপোরেশন। তিন মাসেরও বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণকাজে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। এবার জাপান সরকারও অর্থায়ন বন্ধের কথা জানাল। ইপিসি বলতে মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট ও নির্মাণকে বোঝায়। অর্থাৎ একটি প্রকল্পের প্রকৌশল থেকে নির্মাণ পর্যন্ত পুরোটা বাস্তবায়নের জন্য ইপিসি ঠিকাদার দায়বদ্ধ থাকে।

সুমিতোমোর সিদ্ধান্তের পর প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ এ কথা জানিয়েছেন।

মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের ৩ ও ৪ নম্বর ইউনিটে জাইকার অর্থায়ন বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। তিনি বলেন, টোকিও থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঘোষণা দিয়েছেন যে জাইকা মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩ ও ৪ নম্বর ইউনিটের ঋণ দেয়া থেকে সরে এসেছে। তবে এ প্রকল্পের ১ ও ২ নম্বর ইউনিটের কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি। কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ধাপের অধীনে দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে সিপিজিসিবিএল। ৬০০ মেগাওয়াট করে এ দুটি ইউনিটে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। সিপিজিসিবিএলের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি প্রকল্পটির জন্য ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা দিচ্ছে। বিনিয়োগের বাকি অংশ কোম্পানি ও বাংলাদেশ সরকার নির্বাহ করবে।

মাতারবাড়ী প্রকল্পের জন্য সরকার এরই মধ্যে ১ হাজার ৬০৮ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ১২০০ মেগাওয়াটের আরো দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ রয়েছে। বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এক্সটারনাল ডেটের তথ্যমতে, এ প্রকল্পের কার্যক্রমের কারণে এরই মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ায় দেশ ও বিদেশের পরিবেশকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে মাতারবাড়ী প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। আন্তর্জাতিক চাপ এবং কয়লাবিদ্যুৎ সম্প্রসারণের জন্য তহবিল না পাওয়ায় গত বছর বাংলাদেশ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাতিল করে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শুরুতেই এ প্রকল্পে মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তী সময়ে তা বাড়ানো হয়। এরপর গত বছরের শেষ নাগাদ এ প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর জন্য পুনরায় প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। প্রকল্পে আরো ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির কথা জানায় বিদ্যুৎ বিভাগ।


আরো খবর: