এম.এ আজিজ রাসেল::
কক্সবাজার ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু এখানে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাসপাতালটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এবার এখানে ভুল চিকিৎসায় মারা গেল ২ মাসের এক শিশু। মৃত্যু হওয়া শিশু রামু পানির ছড়া রবি আলমের পুত্র। শিশুটির মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ। শনিবার (১৩ নভেম্বর) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির পিতা রবি আলম বলেন, গত ১১ নভেম্বর তাঁর ছেলে শিশু আবু তালেবকে সামান্য ঠাণ্ডা জনিত কারণে ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালে ভর্তি করায়। ২দিনে আমার শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে। সুস্থ হওয়ার পর শিশুটি সবার সাথে খেলাও করছিল। এই অবস্থায় শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে পারুল নামে একজন নার্স এসে শিশুটিকে একটি ইনজেকশন দেয়। ইনজেকশন দেওয়ার পর রাত ১০টা ৫০ মিনিটে শিশুটি চিৎকার করে খিচুনি দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নুরুল করিম খান এসে শিশুটিকে দেখে নার্সকে অবহেলা ও ভুল ইনজেকশন দেওয়ার কারণে বকাঝকা করেন। এসময় ওই নার্স পালিয়ে যায়।
রোগীর স্বজন রাহাত বলেন, শিশুটি মারা গেলে তাঁরা সমস্ত কাগজপত্র লুকিয়ে ফেলে। স্বজনরা কান্নাকাটি করলে উল্টো তাদের মারতে তেড়ে আসে হাসপাতালের কর্মচারীরা।
হাসপাতালে অন্য এক রোগীর স্বজন থাইংখালী ইমাম হোসেন বলেন, শিশুটি বিকাল থেকে দেখছি সুস্থ ছিল। তাঁর পিতামাতার সাথে খেলছিল। কিন্তু ওই নার্স ইনজেকশন দেওয়ার পরই শিশুটি মৃত্যু বরণ করে।
পরে শিশুটির স্বজনেরা ৯৯৯ এ কল দিলে সদর মডেল থানার এস আই সাইফুদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতালে যায়। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতালের সহকারী ম্যানেজার (প্রশাসন) মো. সলিম উল্লাহ সুজন বলেন, কেউ ইচ্ছে করে রোগীকে মেরে ফেলে না। ভর্তির পর থেকে শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। তিনি বিষয়টি বসে সমাধান করার আশ্বাস দেন।
জানা গেছে, আল ফুয়াদ হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভর্তি ও চিকিৎসার জন্য বেপরোয়াভাবে গলা কাটছে রোগিদের। এক প্রকার জিম্মি করে টাকা আদায় করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় একের পর এক রোগির মৃত্যু বা পঙ্গু হওয়ার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন একটি ঘটনারও ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে দিন দিন রোগিদের সাথে বেপরোয়া আচরণ করে যাচ্ছে আল ফুয়াদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ আছে, কতিপয় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জামায়াতের এই হাসপাতাল থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। এ কারণে বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি।