কলকাতা, ১৭ মার্চ – শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ঠুসে দেওয়া’ মন্তব্যে অনড় ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর শোকজের জবাবে অসন্তুষ্ট তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। সে কারণে মঙ্গলবার সশরীরে তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হুমায়ুনের বিরুদ্ধে কি আরও কড়া শাস্তির পথে দল, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর আলোচনা।
শুভেন্দু অধিকারীর মুসলিম বিধায়কদের ‘চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলা’ মন্তব্য থেকে এই বাকযুদ্ধের সূত্রপাত। এই মন্তব্যে খেপে পালটা তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য ছিল, “আমাকে মারতে এলে রসগোল্লা খাওয়াব নাকি? ঠুসে দেব। ক্ষমতা থাকলে মুর্শিদাবাদে আসুন, দেখে নেব।” গত বৃহস্পতিবার বিধানসভা অধিবেশনের পর বিকেলে মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সূত্রের খবর, সেখানেই হুমায়ুন কবীরের এহেন মন্তব্য নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শক্রমেই তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ভরতপুরের বিধায়ককে শোকজ করে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করা হয়। সেই শোকজের পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার জবাব দেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তবে নিজের মন্তব্যে বরাবরই এককাট্টা তিনি। দলের আগে ধর্ম, তার বারবার জানান হুমায়ুন।
শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। সোমবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা বৈঠকে বসেন। তবে সে বৈঠকের আগেও সংবাদমাধ্যমে উত্তরে নিজের অবস্থানেই অনড় ছিলেন হুমায়ুন। ওই বৈঠকের পর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, “সব রাজনৈতিক দলের কিছু মতাদর্শ আছে। হুমায়ূন এমন কিছু বারবার বলছে যা দলের আদর্শের পরিপন্থী। ও যা বলেছে সেটা ওর ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু একজন বিধায়ক হয়ে একথা বলতে পারে না। ও শোকজের জবাবে যা বলেছে তা সন্তোষজনক নয়। ও বলেছে এটা ওর জাতের ব্যাপার। কিন্তু এখানে জাতের কথা আসলে সংবিধানকে অবজ্ঞা করা হয়। হুমায়ূনকে মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। ওকে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। আমরা ওকে কিছু নির্দেশ দেব। সেগুলো মানতেই হবে।” দলের নির্দেশ না মানলে কি কড়া শাস্তি পেতে হবে হুমায়ুনকে, স্বাভাবিকভাবেই উঠছে সে প্রশ্ন।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
আইএ/ ১৭ মার্চ ২০২৫