বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পেকুয়ায় চেয়ারম্যান কারাগারে,পরিষদে নেই সেবা

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় সেবা নেই মগনামা ইউপিতে। মামলাজনিত কারণে চেয়ারম্যান আছেন জেলে। অপরদিকে কারাবরণে থাকা মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান মো.ইউনুস চৌধুরীকে অপসারণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ প্রবিধান থেকে চেয়ারম্যান মো.ইউনুস চৌধুরীকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পরিবর্তে সরকার মগনামা ইউনিয়ন পরিষদে এক পরিপত্রের আলোকে পেকুয়ার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুর পেয়ারা বেগমকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করেন।

এদিকে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতে বেড়েছে নাগরিক ভোগান্তি। নেই এ ইউপিতে কোন প্রকার নাগরিক সেবা। বিচারিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা চলমান আছে। মগনামা ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত কার্যক্রম বন্ধ আছে।

সুত্র থেকে জানাগেছে, এ ইউপিতে গ্রাম আদালতে প্রায় দুশতাধিক মামলা বিচারাধীন। দেওয়ানী ও ফৌজধারী নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া আছে। ফৌজধারী কার্যবিধির ৯(১) ধারা মতে বিচার নিষ্পত্তির জন্য সরকারি তফসীলভূক্ত প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ। এছাড়াও গ্রামীণ অবকাঠানো খাতের উন্নয়ন কার্যক্রমও পরিচালিত হয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। খেয়াঘাট, ইজারা, বিভিন্ন পণ্য উঠা নামায় সাম্পান ঘাটের ইজারা উন্বয়ন খাতের রাজস্বের টাকাও সরকারি কোষাঘারে জমা দিতে হয়। নাগরিকদের ট্যাক্স ও পরিসেবা খাতের আদায়কৃত টাকাও সরকারি রাজস্বতে ইউপি তহবিল থেকে হস্তান্তরিত হয়।

চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধি দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলমান ও বেগবান হয়ে থাকে। জনপ্রতিনিধিদের কার্য প্রণালী বিধির ভিত্তিতে হয় সিদ্ধান্ত। তবে মগনামা ইউপিতে এসবের কিছুই নেই। সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। নিয়োগকৃত প্রশাসকের দ্বারা এসব কাজ সম্পন্ন করা অনেকটা কঠিন ও জটিল বলে মনে করা হচ্ছে।

অপরদিকে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দাপ্তরিক কার্যভার তদারকির জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বিধিমালায় প্যানেল চেয়ারম্যান ভুক্ত প্যানেল আছে। পুরুষ ও মহিলা মেম্বারদের সমন্বয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান এক থেকে তিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের যুক্তিক তফসীলি আদেশও আছে।

সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা গেছে, মগনামা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের পরিবর্তে সরাসরি দায়িত্ব পালন করছেন প্রশাসক। প্যানল চেয়ারম্যানদের দেওয়া হয়নি দায়িত্বভার।
জানাগেছে, মগনামা ইউনিয়নে ভোটার আছে প্রায় বিশ হাজার। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর মগনামা ইউপিতে নির্বাচন হয়।ওই নির্বাচনে মো.ইউনুস চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারী শপথ গ্রহণ করে জনপ্রতিনিধিরা।

জানাগেছে, পেকুয়ায় মাস্টার আরিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস। ওই মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। চলতি বছরের ১২ নভেম্বর স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ প্রবিধানমালার এক পরিপত্রে মো.ইউনুস চৌধুরীকে চেয়ারম্যান থেকে অপসারণ করা হয়। এর দুদিন পর পেকুয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) নুর পেয়ারা বেগমকে মগনামা ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার।

জানাগেছে, পেকুয়ায় সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়েছে।ওই চারটি ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে।

শরৎঘোনার মকছুদ, লিয়াকত আলী, পশ্চিমকূলের রুহুল আমিনসহ আরো অনেক সেবা প্রার্থী জানান, ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন কাজে আসতে হয়৷ চেয়ারম্যান সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদ,ওয়ারেসী সনদ, নাগরিক প্রত্যয়নপত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর দরকার হয়৷ চেয়ারম্যান কারাগারে। এখন যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনিতো এখানে আসেন না।আমরা একদিনের জন্যও তাকে দেখিনি।
একটা স্বাক্ষর নিতে দিনের পর দিন, সপ্তাহর পর সপ্তাহ অপেক্ষা করে হয়রানি হতে হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে আছি। চেয়ারম্যান নাই কিন্তু প্যানেল চেয়ারম্যানতো আছে।

৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য আমির উদ্দিন বলেন, জনগনকে আমরা সেবা দিতে পারছিনা।জনগনের প্রত্যাশা প্রতিফলন নেই।

৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য কাসেম উদ্দিন বলেন, পরিষদে মানুষ আসে। কিন্তু সেবাতো পাচ্ছেনা।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউপি সচিব) আব্দু রাজ্জাক জানান, সেবা পাচ্ছে না কথাটি সটিক নয়। একটি মহল ষড়যন্ত্র মুলক অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে কাগজপত্রে জঠিলতা থাকলে সেটিতে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সেবা প্রার্থীরা যাতে কোন হয়রানির শিকার না হয়।

এ ব্যাপারে জানতে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুর পেয়ারা বেগম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
###


আরো খবর: