ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর – ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সুশাসন ও জবাবদিহিতায় জোড় দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অপরিচালনা সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালানায় ‘স্টেট অব ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারে গভর্নর বলেন, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার বাইরেও কিছু বিষয় আছে যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডলার বাজার সরবরাহ চ্যানেল এখন অনেকটা স্বস্তিদায়ক। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট (বিওপি) এখন সন্তোষজনক অবস্থানে যাচ্ছে।
সম্প্রতি মুডিস’র রেটিংয়ে বাংলাদেশের বিষয়ে যে তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোকে সেকেলে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, তাদের তথ্য হালনাগাদ নয়। এজন্য তাদের বলেছি, আমাদের এখানে আসুন। এখানে এসে মূল্যায়ন করুন। সিঙ্গাপুরে বসে, অন্য কারও কথা শুনে নয় বাংলাদেশে এসে মূল্যায়ন করুন। আমাদের বিনিময় হার স্থিতিশীল। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্থিতিশীল। মুডিসের রেটিংসে বলা হচ্ছে ডাউনগ্রেড। যেখানে অর্থনৈতিক সূচকগুলোয় আমরা এগোচ্ছি। এ কারণে মুডিসের মূল্যায়নে আমাদের আপত্তি আছে। সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে।
খেলাপি ঋণের পরিমাণ ব্যাংকিং খাতে দিন দিন বাড়ছে। এর কারণ ব্যাখ্যায় আহসান মনসুর বলেন, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য, ব্যাংকিং খাতে এসএমই খাতে ঋণ গ্রহণযোগ্য স্থানে যায়নি। অনেক ব্যাংক এসএমই খাতে গুরুত্ব দেওয়ায় তাদের খেলাপির হার কমে গেছে। ঋণ বিতরণের বেলায় গুণগত নিশ্চিত করতে সতর্ক করা হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ব্যাংকিং খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করায় বেশ কয়েকটি ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে এখন। বেসরকারি খাতের বড় একটি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের তারল্য সংকট হয় মন্তব্য করে আহসান মনসুর বলেন, ব্যাংকটি এক সময়ে অনেক ভালো ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সাপোর্ট দিচ্ছে, আশা করি তারা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে। এরপর অন্য শরিয়াহ ব্যাংকগুলো তখন সাপোর্ট পাবে এর কাছ থেকে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পণ্য সরবরাহের দিকটি দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক কারণেও অনেক সময় দর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাজারে কিন্তু আলুর সরবরাহ আছে। দাম একটু বেশি হলেও পাওয়া যাচ্ছে। অনেক খাদ্যপণ্যের দাম কমে আসছে। শিগগিরই খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে আশানুরূপ হবে বলে মনে করছি। বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সহজ করছে। বিদেশি বিনিয়োগকারিরা মুনাফা ফিরিয়ে নিতে পারছেন আগাম অনুমোদন ছাড়াই বলে জানান গভর্নর।
সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ০২ ডিসেম্বর ২০২৪