কক্সবাজারের টেকনাফে দিনদুপুরে অটোরিক্সা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অপহৃত দুইজনকে উদ্ধার এবং অপহরণকারি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
মঙ্গলবার (২৬নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাহাড়ে অপহরণকারীদের আস্তানা ঘিরে পুলিশের সাথে জনতা অপহৃত দুই জনকে উদ্ধার ও অপকহরণকারী তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া দুই রোহিঙ্গা হলেন,উখিয়ার বালুখালি ৮ নম্বর ক্যাম্পের আবুল বাছেরের ছেলে মোহাম্মদ শামশু ও ১১ নম্বর ক্যাম্পের আবদুর শুক্কুরের ছেলে আনিছুল আলম।
আটক
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী হলেন,টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ সাইফুল,সদর ইউনিয়নের মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ কবিরের স্ত্রী মরিয়াম(৫০)ও একই এলাকার রবিউলের স্ত্রী নছিমা আক্তার(৩০)।
এরআগে সোমবার বেলা ১১টায় টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ায় অটোরিক্সা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে অপহরণ করা হয় এই দুইজনকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান।
উদ্ধার হওয়া অপহৃত মোহাম্মদ শামশু ও আনিছুল আলম বলেন,বালুখালি ক্যাম্প থেকে মাছ কিনতে তারা দুইজন টেকনাফে আসেন।টেকনাফ বাজারে মাছ না পেয়ে মাছের জন্য আটোরিকশা যোগে বাহারছড়া ইউনিয়নে শামলাপুর যাওয়ার পথেই তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।পরে তাদের কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রাখা হয় পাহাড়ে।ওখান থেকে জনতা উদ্ধার করেছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, সোমবার দুই জনকে ঘটনার সময় ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান স্থানীয় এক ব্যক্তি কৌশলে নিজের ব্যবহৃত মুঠোফোনে ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র ধারণ করেছেন।পরে বিষয়টি পুলিশ অবহিত করেছেন।ভিডিওতে ঘটনায় জড়িত দূর্বৃত্তদের কয়েকজকে চেনা গেছে।তারা হল,টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার বাসিন্দা কবির আহমদের ছেলে মুজিব উল্লাহ ও শওকত উল্লাহ, লম্বরী এলাকার মোহাম্মদ কবিরের ছেলে মো. শহীদ, নতুন পল্লান পাড়ার নুরু সালামের ছেলে মো. হাশিম এবং হাতিয়ারঘোনা এলাকার নজির আহমদের ছেলে মো. নয়ন।তিনি আরও বলেন,বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করার পর পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনতাকে সাথে নিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে সফল হওয়া গেছে।টেকনাফের অপহরণ সহ অপরাধ রোধে জনতাকে একইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান,জনতার সহযোগিতায় দুই জনকে উদ্ধার এবং তিনজনকে আটকের ঘটনায় মামলা হবে।জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য,কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভোক্তভোগীদের তথ্য বলছে, এনিয়ে গত একবছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪০ জনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ৮৩জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৬জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৬৯ জন মুক্তিপণ আদায় করে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার তথ্য মতে,২০২৪সালের১৮আগষ্ট থেকে নভেম্বরের এই পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১২টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৫০।এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০ জনকে।