কারাকাস, ২৯ জুলাই – দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলায় গতকাল রবিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনী পরিষদের প্রকাশিত আংশিক ফলাফল অনুযায়ী, ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বিজয়ী হয়েছেন।
ন্যাশনাল ইলেকটোরাল কাউন্সিলের (সিএনই) প্রধান এবং মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মিত্র এলভিস আমরোসো বলেছেন, ৮০ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছে ৪৪ দশমিক ০২ শতাংশ এবং মাদুরো পেয়েছেন ৫১ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট।
এই নির্বাচনে ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা নিকোলাস মাদুরোর দল ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টি অব ভেনিজুয়েলা (পিএসইউভি) কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর থেকে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিকোলাস মাদুরো প্রেসিডেন্ট পদে আছেন। তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে লড়ছেন তিনি।
তবে তার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির হয়েছেন সাবেক কূটনীতিক এডমুন্ডো গনজালেজ।
বিরোধী দলগুলোর জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি। জনমত জরিপে গনজালেজ মাদুরোর চেয়ে এগিয়ে। অনেক ভোটার বলেছেন, তারা ২৫ বছর পর এবার পরিবর্তন চান। প্রথমে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বে এবং ২০১৩ শ্যাভেজের মৃত্যুর পর থেকে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিকোলাস মাদুরো নেতৃত্বে পিএসইউভি পার্টি শুধু নির্বাহী এবং আইনসভা নয়, বিচার বিভাগের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে।
মাদুরোর ২০১৮ সালের পুনর্নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে ব্যাপকভাবে সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল এবং এই নির্বাচনের দৌড়েও ব্যাপক ভয় ছিল যে ভোটে আবার অনিয়ম হবে। এই ভয় আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল, যখন রাষ্ট্রপতি মাদুরো বলেছিলেন, ‘যেকোনো মূল্যে আমি জিতব।’ তবুও বিরোধী দল নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। তারা যুক্তি দিয়েছিল, যদি তাদের সমর্থকের সংখ্যা ব্যাপক আকারে থাকে, তাহলে সরকারের পক্ষে নির্বাচনে কারচুপি করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে।
ভেনিজুয়েলায় ভোট ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ নেওয়া হয়।
ইলেকট্রনিক ফলাফল সিএনই সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। তবে মেশিনটি একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে দেয়, যা পরে একটি ব্যালট বাক্সে রাখা হয়। আইন অনুসারে দলগুলোকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে করা এই কাগজের রসিদের গণনার জন্য সাক্ষী পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অনেককে তা করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভেনিজুয়েলার বিরোধী দল ভোট গণনায় ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ করেছে এবং এ ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার কথা জানিয়েছে। প্রতিপক্ষ এডমান্ডো গনজালেজ নেতৃত্বাধীন জোটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের সাক্ষীদের অনেক ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। সরকার ভোট চুরি করার চেষ্টা করবে এমন আশঙ্কার মধ্যে বিরোধীরা সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নজরদারি রাখার জন্যও আহ্বান জানিয়েছিল।
১১ বছর ধরে দেশটিতে ক্ষমতায় আছেন প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। এই নির্বাচনকে মাদুরোর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ২৯ জুলাই ২০২৪