মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া শালবাগান এলাকা থেকে অপহরণের শিকার মাদ্রাসা পড়ুয়া তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মোঃ সাইফকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এ সময় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজন গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন,টেকনাফ জাদিমুড়ার নুর আলমের ছেলে মোঃ সাব্বির (১৭),রেজিস্টার্ড শালবন নয়াপাড়া ক্যাম্পের ব্লক-এ/৫ এর আবুল ফয়েজ প্রকাশ মাঝির ছেলে রোহিঙ্গা হাসান বশর (১৯),জাদিমুড়ার সৈয়দ হোছনের ছেলে মোঃ আব্দুল্লাহ (১৬), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে সেলিম (৪৭) ও জাদিমুড়ার আবুল কালামের ছেলে আক্তার কামাল (১৬)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,গত রবিবার (২৮ এপ্রিল) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া নয়াপাড়া শাল বাগান রাস্তার মাথা থেকে জাদিমুড়ার রহমানিয়া হোসাইনিয়া মাদ্রাসা নূরানী বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মোঃ সাইফ (৯) নামে এক শিক্ষার্থী অপহরণের শিকার হয়। অপহৃত ভিকটিম প্রতিদিনের মত মাদ্রাসা ছুটি হয়ে রাত হলেও বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন তাকে খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে পরদিন সকালে একটি মোবাইল ফোন থেকে কল করে সাইফ’কে পেতে বিপুল পরিমাণ অর্থ মুক্তিপণ দাবী এবং মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যে ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের মামা বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে জনমনে ব্যাপক সমালোচনা ও ভিকটিমকে উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অপহরণের ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হওয়া মাত্রই র্যাব-১৫ ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণ চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ থানাধীন শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প, জাদিমুড়া, দমদমিয়া এবং নাজিরপাড়া এলাকায় র্যাব-১৫, সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিম হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া নয়াপাড়ার মৃত মোহাম্মদ হোছনের ছেলে মোঃ সাইফ (৯) কে উদ্ধার এবং অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজন গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধার করা হয় ২টি এন্ড্রয়েড ফোন, ২টি বাটন ফোন, ১টি ঘড়ি এবং নগদ ৩০০/- টাকা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহৃত ভিকটিম সাইফ’কে ঘটনার দিন টাকার প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে। আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা অপহরণ ও কিশোর গ্যাং এর সদস্য। তারা স্থানীয় ও রোহিঙ্গা কম বয়সী যুবকদের ১২-১৫ জনের সমন্বয়ে একটি কিশোরগ্যাং তৈরী করে এবং অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছিল। তাদের গ্যাং এর সদস্যদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে এই অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় কার্য সম্পাদন করে থাকে মর্মে স্বীকার করে।
তিনি আরো জানান,গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।