চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালুর বিষয়টি রেলওয়ের এক নম্বর অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেছেন, আমরা নীতিগতভাবে একমত; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন দিতে হবে। এটা এক নম্বর প্রায়োরিটি। এই রুটে ট্রেন চালুর প্রশ্নে আমাদের কোনো না নেই।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিংয়ের (সিআরবি) সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন রেলের মহাপরিচালক।
মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার চট্টগ্রাম সফরে এসেছেন সরদার সাহাদাত আলী। এ সময় তিনি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
রেলওয়ের মহাপরিচালক আরও বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালুর দাবি বিবেচনায় নিয়েই টাইম-টেবিলে দুটি ট্রেন রাখা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু হিসাব-নিকাশ আছে। দৈনিক কত যাত্রী যায়, আমরা কয়টা ট্রেন চালাতে পারি-এসব। আমরা জানি এই রুটে ট্রেন চালু হলে মানুষের কষ্ট কম হবে। রেলওয়ের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জনবল ও ইঞ্জিন সংকট।
রেলওয়ের সংকট তুলে ধরে সরদার সাহাদাত আলী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আমরা ট্রেন চালাতে পারব। সেক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের কনটেইনারবাহী একটি ট্রেন কম চালাতে হবে। কারণ হচ্ছে- আমার ইঞ্জিন আছে, বগি আছে, কিন্তু চালক নেই। আমরা নিয়োগ দিচ্ছি-কিন্তু অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে প্যানেল সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। চুক্তিতেও পুরোনো লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তবুও সহজে সমাধান মিলছে না।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নিয়ে গত কয়েক বছরে কম কথা হয়নি। তবে সেতুটি শিগগির হবে বলে আশার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি আমরা দাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেতুর জন্য ১২ হাজার কোটি টাকার মতো লাগবে। সরকারি অর্থায়ন (জিওবি) থেকে আসবে ৪ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা দেবে দাতা সংস্থা। কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক কথা দিয়েছে। তারা আগামী জুনে সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি করতে চায়। এটি হয়ে গেলে আমরা কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করব।
পরিকল্পনা আর কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করে রেলওয়ের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, নানা কারণে সমন্বয়টা অনেক ক্ষেত্রে হয়নি। এর কারণ হচ্ছে-আমরা অবকাঠামো এবং রোলিং স্টক নিয়ে কাজ করি। দুটো কাজ যখন সমান্তরালভাবে হয় না, দুটোর মধ্যে যখন গ্যাপ থেকে যায়, তখন সমস্যা হয়। দেখা যায়-আমার লাইনগুলো চালাতে পারছি না।
তবে এই সমস্যার জন্য রেলওয়ের কোনো দোষ নেই বলে দাবি করেন সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেন, আমাদের প্রকল্পগুলো কিন্তু প্রায় বিদেশি দাতা সংস্থার ফান্ডিংয়ে হয়। দেখা গেল- অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ফান্ডিং পেলাম-কিন্তু রোলিং স্টকে পেলাম না। তখন সমস্যাটা হয়। তবে আমরা কাজ করছি। রানিং প্রজেক্টগুলো শেষ হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।