বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কক্সবাজার ভ্রমণের লোভ দেখালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার) অনুষ্ঠানে আবারও নির্বাচিত হলে এক হাজার শিক্ষক শিক্ষিকাদের সপরিবারে কক্সবাজার ভ্রমণের আশ্বাস দিয়েছেন এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তার এমন ঘোষণায় নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে কালিয়াকৈরে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য প্রার্থীরাও।

এলাকাবাসী, প্রার্থী সমর্থকরা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২১শে মে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী মাঠে একাধিক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। কিন্তু এদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কৌশলে আমন্ত্রণ জানায়। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে উপজেলার কালামপুর এলাকায় সোহাগ পল্লি পিকনিক স্পটে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও ইদ পুনর্মিলনী নামে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের নামে সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ডেকে তার নির্বাচনী প্রচারণা করেন ওই প্রার্থী।

এসময় চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি আবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী। এ নির্বাচনে আরো ২-৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন। আপনারা বিচার বিশ্লেষণ করে আমাকে সহযোগিতা করবেন। যদি আমি আবারও নির্বাচিত হতে পারি তাহলে তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকাকে সপরিবারে দুইদিনের জন্য কক্সবাজারে সফরে নিয়ে যাওয়া হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তার এমন ঘোষণায় বিভিন্ন মহলসহ চা-দোকানেও নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এর আগে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঝু খান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও এসএসসি পরিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের অর্থ দেওয়ার ঘোষণা দেন ওই প্রার্থী। এসব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য প্রার্থীরাও।

মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন দেওয়ান জানান, আমরা শিক্ষকরা নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করে থাকি। তবে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এভাবে নির্বাচনী প্রচারণা করবেন আগে জানলে আমরা যেতাম না।

এবিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এবং আসন্ন নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম আজাদ জানান,সরকারি বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্বাচনের সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত করে নিয়ে নির্বাচনের জেতাতে পারলে সপরিবারে কক্সবাজার ভ্রমণ করাবেন এমন আশ্বাস নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে আমি মনে করি।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে,আচরণ বিধিতে উল্লেখ আছে, সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করে থাকেন ।

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে কোনো প্রার্থী শিক্ষকদের ডেকে এনে এ ধরনের প্রলোভন দেওয়া নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন কিনা জানতে চাইলে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাফিজুর রহমান প্রতিবেদককে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন।


আরো খবর: