টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া গ্রামে গুলিতে নিহত ফুটবল খেলোয়াড় মো. জুবাইর নিহতের ঘটনায় ৮জনকে আসামী হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) রাতে ঘটনার দুইদিন টেকনাফ মডেল থানায় দায়ের করা এ মামলার বাদী হয়েছেন নিহতের মা মাবিয়া খাতুন। যার (মামলার নং-১৩৬,জিআর নং-১৮০ তারিখ-০১/০৪/২০২৪)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও নাজির মৃত মোজাহার মিয়ার ছেলে এনামুল এক প্রকাশ এনাম (২৮)কে ১নং আসামী, একই এলাকার জাগির হোসেনের দুই ছেলে ফিরোজ উদ্দিন(২৬) কে ২নং,নজুম উদ্দিন (২৪) কে ৩নং ও নুর মোহাম্মদ প্রকাশ ছেপ্পুড়ীর ছেলে সামশুল হক প্রকাশ বদাফুলাসহ ৮ জনকে এজাহার নামীয় অজ্ঞাতনামা আসামী আরো ৭-৮ জন আছে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় ফুটবল খেলোয়াড় মো. জোবাইরকে একই এলাকার বন্ধু ও দোকানদার নজুম উদ্দিন তার কাছ থেকে ৮০০ টাকা পেতেন।সেই টাকা মোবাইলে ফোন করে ফেরত চাইলে দুই বন্ধুর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
কিছুক্ষণ পর নজুম উদ্দিন, তাঁর ভাইসহ কয়েকজন মিলে জোবাইরের বসত-বাড়িতে গিয়ে জোবাইরকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।
এ সময় জোবাইরের মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এতে জোবাইরের ছোট বোন তাহেরা আক্তার (২২) এর শরীরে গুলির স্প্রিন্টার লাগে। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
পরে জোবাইরকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহত জোবাইরের বোন হাসিনা,লায়লা, মর্জিনা বলেন,শনিবার ইফতারের কিছুক্ষণ আগে নজুম উদ্দিন জোবাইরকে ফোন করে বলেন,বন্ধু তুই কোথায়।জোবাইর বলে,আমি বাড়িতে।তুই বাড়িতে থাক, আমি আসতেছি।
এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে নজুম উদ্দিনসহ কয়েকজন অস্ত্র-শস্ত্রসহ বাড়িতে এসে কোনো কথা ছাড়াই গুলি করেন জোবাইরকে। জোবাইরের বোনরা অভিযোগ করেন,স্থানীয় ইউপি সদস্য এনামুল হকের ইশারায় ও তাঁর দেওয়া অস্ত্রে তাঁদের ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। তারা ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে জড়িত সবার ফাঁসির দাবি করেন।
মামলার বাদি মাবিয়া খাতুন বলেন,আমার বসত-বাড়িতে এসে নজুম উদ্দিন, তাঁর ভাইসহ কয়েকজন মিলে আমার ছেলে জোবাইরকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয়, এমন আহাজরী করে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠিন শাস্তি দাবি করেন তিনি। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে এদের ফাঁসি নিশ্চিত করা হোক।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, নিহত মো. জোবাইর হত্যার অভিযোগে নিহতের মা মাবিয়া খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
###