বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

উখিয়ায় জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাদান ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩

মুজিববর্ষে স্বাস্থ্যখাত এগিয়ে যাবে অনেক ধাপ স্লোগানকে সামনে রেখে কক্সবাজারের উখিয়ায় জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ব্যাপকহারে কুকুরকে টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স সভাকক্ষে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রঞ্জন বড়ুয়া রাজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার, উখিয়া হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা: মোয়াজ আবরার, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা: ছৈয়দ হোসেন, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) নুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এমডিবি সুপারভাইজার মো. তানজিল হাসান ও মো. শাকিল খান।

অবহিতকরণ সভায় জানানো হয়, চলতি মাসের ২৯ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বেওয়ারিশ কুকুরকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা প্রদান করবে। পোষা কুকুর ও বেড়ালকেও টিকা প্রদান করা হবে।

এতে পুরো উপজেলার ৫ ইউনিয়নে স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর ও এমডিবি’র ১৪০ জন দক্ষ কর্মী প্রতিটি এলাকা ঘুরে ঘুরে কুকুর ধরে জলাতঙ্কের টিকা প্রয়োগ করে গায়ে রং মাখিয়ে ছেড়ে দেবেন।

৫ দিন ব্যাপি এই কর্মসূচিতে বেয়ারিশ কুকুরকে টিকা দিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এর আগে (২০১৯ ইং) সালে প্রথমবারের মত এর কার্যক্রম চালু হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের পরিসংখ্যান অফিসার সঞ্জয় দাশ, মেডিকেল টেকনোলজিস বোরহান উদ্দিন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ইউপি সদস্য, বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রতিনিধিগণ ও সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উল্লেখ্য, জলাতঙ্ক র‍্যাবিস ভাইরাসজনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। র‍্যাবিস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কুকুর রোগটির প্রধান বাহক।
এছাড়াও অন্যান্য প্রাণি যেমন বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানরও রোগটি ছড়াতে পারে। এই ভাইরাস মানুষের তুকের কাঁটা বা শ্লেসাঝিল্লির স্নায়ুর মাধ্যমে আক্রমন করতে পারে। এছাড়া কুকুর এর লেহনের ফলে নখ লালার মাধ্যমে এর ভাইরাস আসতে পারে। তাই আঁচড়ে এ সংক্রমন হাতে পারে। রোগের লক্ষণ প্রকাশের ৭-১০ দিনের মধ্যে রোগীর মর্মান্তিরকভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়। ফলে আজও এই জনস্বাস্থেও সমস্যা সারাদেশে বিদ্যমান রয়েছে। প্রতি বছর বিশ্বে ৫৯,০০০ জন মানুষ এ রোগে মারা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে জানা যায়, বিশ্বের কোথাও না কোথাও প্রতি ১৫ মিনিটে একজন মারা যায়। তবে সময়মত অর্থাৎ কামড় বা আঁচড়ের সাথে সাথে আক্রান্ত স্থান সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মতে উষ্ণমন্ডলীয় অবহেলিত রোগ গুলোর মধ্যে জলাতঙ্ক অন্যতম কারণ এ রোগে সাধারণত গ্রামীন জনপদের হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও শিশুরা সর্বাধিক আক্রান্ত হয়। তাদের অজ্ঞাতর দরুণ তারা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

স্থানীয়ভাবে সচেতনার বৃদ্ধি চিকিৎসা ও টিকা গ্রহণ এবং ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ঝুকিমুক্ত করা যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন।

কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রমের আওতায় এ পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশের সকল জেলায় প্রথম রাউন্ড, ১৭টি জেলায় দ্বিতীয় রাউন্ড এবং ৭টি জেলায় তৃতীয় রাউন্ড টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ২২ লক্ষ ৫২ হাজার ২শ ৫৩ টি কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা প্রদান করা হয়েছে।


আরো খবর: