নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া::
সৃষ্ট বন্যায় কক্সবাজারের পেকুয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করা হয়েছে প্রায় ২৯ কোটি টাকা। গেল বন্যায় উপজেলার সাত ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছিল। প্রবল বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদী হয়ে বয়ে আসা পাহাড়িঢলে তলিয়ে গেছে পেকুয়া।
সাত ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নের বাসিন্দা পানিতে ভাসছে টানা কয়েকদিন। বন্যার পানিতে বসতঘর, ক্ষেতখামার, রাস্তা, ফসলের বীজতলা, চিংড়িঘের, মৎস্যখামার,নলকুপ তলিয়ে গেছে। এক দূর্বিসহ দিন পার করতে হয়েছে বানবাসীদের। এবারের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৯কোটি টাকা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা। তিনি জানান, সৃষ্ট বন্যায় মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে পেকুয়ায়। টানা ৪-৫ দিন পানিতে ভেসেছে মানুষ। প্রায় ঘরে পানি ঢুকেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে বন্যার প্রভাবে লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণ প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যসুত্রে জানাগেছে,এবারের বন্যায় উপজেলায় ৬৫০টি কাঁচা বাড়ি সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ক্ষতি হয়েছে ১০কি.মি। এতে ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে দুই কোটি টাকা। পল্লীবিদ্যুতের বিদ্যুত লাইনের ক্ষতি দেখানো হয়েছে ১২ লক্ষ টাকা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পেকুয়ার প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদ জানান, বন্যায় আংশিক ও সম্পূর্ণভাবে ৫৬ কি.মি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে পাকা সড়ক ১কি.মি, ইট ও খোয়া দ্বারা নির্মিত সড়ক ১৫ কি.মি। এছাড়া কাঁচা সড়ক রয়েছে ৪০ কি.মি। এতে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হয়েছে,২কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা।
কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, বন্যায় প্রায় ১৫২ হেক্টর জমির শস্যক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়া ১৯০ হেক্টর বীজতলা তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯কোটি ১৬লক্ষ৫৩ হাজার ৮৩৪ টাকা।
মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে ২কোটি ৯৪ লাখ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে হাঁস,মুরগি। এতে ক্ষতির পরিমাণ নির্নয় করা হয়েছে ১কোটি ১৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৮০ টাকা। এছাড়া শিক্ষাখাতে ৫১ লক্ষ টাকা,স্বাস্থ্যখাতে ৪১ লক্ষ টাকা সহ আরো অন্যান্যখাতে প্রায় ৪ কোটি ১২ লক্ষ৬১ হাজার টাকা ক্ষতি দেখানো হয়েছে।