আব্দুস সালাম,টেকনাফ::
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় পাহাড় ঘেরা ছোট্ট একটি গ্রাম দক্ষিণ শীলখালী। ওই গ্রামে বাবার দেয়া ছোট একটি কুঁড়েঘরে ওবাদুল্লাহ নোমান ও মাহিমকে নিয়ে বসবাস করতেন গৃহবধু আফিয়া। পরকীয়ার কারণে ৩বছর পূর্বে আফিয়াকে ডিভোর্স দেন নোমানের বাবা সৈয়দ আলম।
স্বামী না থাকা এবং পরিবারের অভাব অনটনের সুযোগে আফিয়ার সাথে মোবাইলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে অনেকেই। আনোয়ার তাদের মধ্যে একজন।
গত ৩ জুলাই রাতের খাবার শেষে মায়ের সাথে ঘুমিয়ে পড়ে নোমান। গভীর রাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে যায় তার। তার পাশে মাকে না পেয়ে জেগে উঠে নোমান। মাকে খুঁজতে বাইরে এসে ঘরের পাশে নির্জন স্থানে একজন অচেনা পুরুষ ও তার মায়ের খারাপ দৃশ্য দেখে সে।
নোমান তার মায়ের কাছে জানতে চায় “লোকটি কে?” উত্তর না পেয়ে বড় ভাইকে ডাক দেয়ার জন্য পিছন ফিরে ঘরের দিকে দৌড় দেয় । ঠিক তখনই নোমানের মাথার পিছনে কাঠ দিয়ে আঘাত করে পরকিয়া প্রেমিক আনোয়ার। এতে নোমানের মাথার পিছনে হাড় ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছটফট করতে থাকে ৮বছরের শিশু নোমান। এরপর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে নোমানকে হত্যা করে নরপিচাশ আনোয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে দুজনে মিলে নোমানের নিথর দেহ বাড়ির পিছনে পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দেয়।
এ সংক্রান্তে বিষয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে টেকনাফ থানায় মামলা রুজু হয়। যার নং ৯, তারিখ -০৭/০৭/২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২১১/৩৪ পেনাল কোড।
টেকনাফ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দের সার্বিক সহযোগিতায় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মামলাটির তদন্ত শুরু করা হয়। বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মশিউর রহমানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার্স ফোর্সের সহযোগিতায় নিরলস পরিশ্রম, বার বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা হয় এবং মামলার ঘটনার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী আফিয়া (২৮) কে মঙ্গলবার ভোরে উখিয়া থানাধীন ইনানী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী আফিয়া নিজের এবং তার পরকীয়া প্রেমিক আনোয়ারের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছেন।