বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

নাইক্ষ্যংছড়িতে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে আগাম রবিশস্য, পানির স্রোতে নিখোঁজ ১

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩

জাহাঙ্গীর আলম কাজল, নাইক্ষ্যংছড়ি::

টানা ৫ দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আগাম রবিশস্য। একই সাথে উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নে পানির স্রোতে নিখোঁজ রয়েছে মেমপই ম্রো (৩০) নামে ১ জন। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ২নং ও ৬নং ওয়ার্ডে ৩টি বসত ঘর সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে গেছে। এছাড়া ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকায় ৩টি গ্রাম বন্যার পানিতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলার কয়েকটি প্রধান সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসন ৪৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখে পুরো উপজেলায় নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সতর্ক থাকতে মাইকিং করছেন। উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ দুর্যোগে সবাইকে সর্তকতা অবলম্বন ও জনগনের পাশে থাকতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম কোম্পানী বলেন, তার ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড করিম্মার ঝিরিতে পাহাড় ধসে একই পরিবারের শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছে। পাহাড় ধসে কয়েকটি বাড়ী আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বাইশারী আলিক্ষ্যং সড়ক চাক হেড়ম্যান পাড়া সড়কে কযেকটি স্থানে ভাঙন দেয়া দিয়েছে।

সোমবার (৭ আগস্ট) আলীকদম বাজার থেকে আসার সময় বুছি খালে পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে দৌছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড রিংয়ে ম্রো পাড়ার বাসিন্দা ঐবরাত ম্রোর পুত্র মেমপয়ই (৩০) ভেসে যায়। বৃষ্টির কারণে এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা।
তুমব্রু গ্রামের বাসিন্দা সংবাদ কর্মী মাহমুদুল হাসান বলেন, তার বাড়ি তুমব্রু গ্রামে। টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে তুমব্রু ছাড়াও কোনার পাড়া, তুমব্রু পশ্চিমকুল ও আশপাশ এলাকা বছরের প্রথম বন্যাটি তাদেরকে ক্ষতিতে ফেলে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছুটে যান ঘটনাস্থলে এবং ব্যবস্থাও নেন প্রয়োজন মাফিক।
দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেহাম্মদ ইমরান বলেন, তার এলাকার সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়কটি হাটুভাঙা নামক এলকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কোন মূহুর্তে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অপর একাধিক সূত্র জানান, উপজেলার কৃষিতে নির্ভর গ্রাম গুলোতে কৃষকরা আগাম রবিশস্য চাষ করলেও ৪ দিনের টানা বর্ষণে সে চাষের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । আর পানের বরজ ও ধান ক্ষেতের ক্ষতি কম হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, এনামুল হক বলেন, তিনি বন্যার ক্ষতির বিষয়ে সজাগ থাকতে তার অধিনস্থ উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।

উপজেল প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আবদুল্লাহ আল নেমান এ প্রতিবেদককে জানান, বন্যা ও পাহাড় ধস দূর্যোগ সহ সব ধরণের আপদ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত। ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। আর সব কিছু যথাযথভাবে করতে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরী সভা করেন ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সকলকে সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে দুর্যোগ মোকাবেলায দায়িত্ব পালনে কঠোর নির্দেশনা দেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা এ প্রতিবেদককে বলেন,কয়েকদিন ধরেই নাইক্ষ্যংছড়িতে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। প্রাণহানির শঙ্কায় পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে। ৪৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ঘুমধুমে ২টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়। আর জরুরি এ অবস্থায় ২টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, বাইশারীতে পাহাড় ধসের ঘটনায় আহতদের খোঁজ নিযে তাদেরকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তুমব্রুর বন্যার আর সদর ইউনিয়নসহ পুরো উপজেলার পাহাড়ি ও বাঙ্গালি পাড়া ও গ্রামগুলোর বিষয়ে উপজেলার সব দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।


আরো খবর: