টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের ঘিলাতলীর মৃত মোজাহের মিয়ার পুত্র আব্দুস শুক্কুর কর্তৃক উখিয়া থানায় দায়েরকৃত সাজানো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে করেছে ভুক্তভোগীরা।
১৭ জুলাই (সোমবার) বিকালে উখিয়া প্রেসক্লাবের হল রুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভুক্তভোগী শাহ আলম, সৈয়দ আলম, সাদ্দাম হোছেন ও মোঃ আব্দুর রশিদের পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী শাহ আলম।
এসময় শাহ আলম বলেন, টেকনাফের আব্দুস শুক্কুর, নুর আলম, সিফাত মিয়া, পল্লী ডা. আব্দুর রশিদ, মোঃ মুবিন, আব্দু জলিল গং এরা গরু ও মহিষ বেচাকেনার ব্যবসা করে। সেই সুবাদে আমরাও গরু, মহিষ ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসায়ী হিসাবে তাদের কাছ থেকে ১৫ টি গরু সরবরাহ ক্রয় করার চুক্তিতে বিগত ৫ই মে উখিয়া রাজাপালংয়ের সিকদার বিল গরু বাজারে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে পর্যাক্রমে নুর আলম ৫ লক্ষ টাকা সিফাত মিয়া ৪ লক্ষ টাকা পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রশিদ ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকাসহ মোট ১১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা অগ্রীম বাবদ নগদ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, মূলত মো. মুবিন ও আব্দু জলিল এর কথামত আমরা টাকা অগ্রীম প্রদান করি। কিন্তু তারা অগ্রিম টাকা নিলেও তাহাদের সাথে মৌখিক চুক্তি ও কথামত গরু সরবরাহ করেনি এবং কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাদের কাছ থেকে গরু পাইনি।
এমতাবস্থায় এরা আমাদেরকে গরু সরবরাহ দিতে পারবেনা বুঝতে পেরে পরবর্তীতে তাঁদের কাছে দেওয়া পাওনা টাকাগুলি ফেরত চাইলে এরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে টাকা আজ দিবে কাল দিবে বলে বারবার সময় নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য কালক্ষেপন করলে এ বিষয়ে আমরা স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের অবগত করে সালিশ দায়ের করি। সালিশে সাক্ষী প্রমাণে ১১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পাওনার বিষয়টি সঠিক প্রতিয়মান হওয়ায় সালিশকারক আমাদের পাওনা টাকা ফেরত দিতে বললে কিন্তু তারা সালিশকারকদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে টাকা ফেরত না দিয়ে বরং উল্টো বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি প্রদান শুরু করে।
পরবর্তীতে গত ৬ জুন পালংখালীতে আমরা ব্যবসায়ীক কাজে গেলে তাদের দেখতে পেয়ে পূণরায় টাকা ফেরত চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ, উচ্ছৃংখল ও মারমূখী আচরণ দেখিয়ে টাকা ফেরত দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় এবং একপর্যায়ে আমাদেরকে হামলা ও মারধর করতে উদ্যত হলে আমরা নিরাপদ দূরত্বে সরে এসে তাদের কবল থেকে প্রাণে রক্ষা পাই। যা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অবগত আছেন।
অতঃপর পাওনা টাকা উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা উল্লেখ করে তাদের ৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি এবং অভিযোগের রিসিভ কপি সংগ্রহ করি।
কিন্তু অতিব দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, থানায় আমাদের অভিযোগের তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো গত ৮ জুন টাকা আত্মসাৎকারি আব্দুস শুকুর বাদী হয়ে আমরা চাঁদা দাবী ও অপহরণ করেছি মর্মে সাজানো বানোয়াট একটি গল্প বানিয়ে উখিয়া থানায় এজাহার দায়ের করলে উখিয়া থানার পুলিশ কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই তড়িগড়ি করে তাদের এজাহার আমলে নিয়ে মামলা হিসাবে রেকর্ডভুক্ত করে। যার মামলা নং- ১৭/২৯৩, তারিখ- ০৮/০৬/২০২৩ ইং।
কিন্তু বাস্তবতা হলো এম.এস.এফ এর অফিসে সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে কর্মরত মো. মুবিনুল ইসলামের সাথে গত ৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সময় ডিউটি শেষে বাড়ী ফেরার সময় আমাদের সাথে দেখা হয় এবং তার সাথে পাওনা টাকা ফেরতের বিষয়ে আলাপ করি। যা স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী বকুল মল্লিক ও জামাল জানেন। অথচ ওইদিন চাঁদাবাজী ও অপহরণের মত এই রকম কোন ঘটনা ঘটেনি। মামলায় উল্লেখিত সবকিছু পরিকল্পিত সাজানো এবং উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও সাজানো বানোয়াট গল্প। আমাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে তদন্ত না করেই উল্টো তাদের এজাহারের তদন্ত ছাড়াই কেনো রেকর্ড করা হয়েছে তা প্রশাসনের প্রতি আমাদের একটি প্রশ্ন রয়ে গেল।
এদিকে, ওই মামলায় প্রধান আসামী মো. আব্দু রশিদ বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। ফলে তার অসহায় পরিবার বর্তমানে অভাব অনটনে মানবেতর জীবন যাপন করছে। যা খুবই দুঃখজনক।
এমতাবস্থায় প্রসাশন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে উক্ত মিথ্যা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক মামলার দায় থেকে আসামীদের অব্যহতি ও প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।