ব্যাংকক, ১২ জুলাই – রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রয়ুত চান-ও-চা। সেনা সমর্থনপুষ্ট এ নেতা আর নির্বাচনে লড়বেন না বলে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) নিশ্চিত করেছে তার দল।
গত মে মাসের নির্বাচনে রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে প্রয়ুতের দল রুয়াম থাই সাং চার্টের। তার সেনা-সমর্থিত সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বেশিরভাগ থাই ভোটার। এ অবস্থায় নতুন প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নির্বাচনের দুদিন আগেই রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে সরে দাঁড়ালেন ৬৯ বছর বয়সী এ নেতা।
২০১৪ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান প্রয়ুত চান-ও-চা এবং নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অধিকাংশ আসনে জয়ী হয় তার রাজনৈতিক জোট এবং সিনেটের সমর্থনে নেতা নির্বাচিত হন তিনি।
কিন্তু গত মে মাসের নির্বাচনে থাই জনগণ সেনা-সমর্থিত শাসক গোষ্ঠী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা প্রগতিশীল দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি সর্বোচ্চ ভোট পায় এবং সর্বাধিক আসন জয়লাভ করে।
থাইল্যান্ডে দু’দশক ধরে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে থাকা ফিউ থাই পার্টি হয় দ্বিতীয়। আর প্রয়ুত চান-ও-চার দল রুয়াম থাই সাং চার্ট জেতে মাত্র ৩৬টি আসনে। ফলে আরেক দফা প্রধানমন্ত্রী থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এই সাবেক সেনাপ্রধানের জন্য।
যদিও নতুন সরকার গঠিত হওয়ার আগপর্যন্ত প্রয়ুতই থাকছেন থাই প্রধানমন্ত্রীর পদে।
সামরিক অভ্যুত্থানের নেতা, সাবেক জেনারেল থেকে প্রধানমন্ত্রী বনে যাওয়া প্রয়ুতের শাসনামলে থাইল্যান্ডে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদ এবং বৈষম্য বিস্তৃত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২০ সালে তার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল সারা দেশের তরুণরা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ব্যর্থ প্রতিশ্রুতি এবং নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদ গণবিক্ষোভে রূপ নেয়।
করোনভাইরাস মহামারি ও অর্থনীতি পরিচালনা, স্বজনপ্রীতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব প্রয়ুতের পদত্যাগের দাবিকে আরও জোরালো করে তুলেছিল।
চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পরিচালক এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞানী থিতিনান পংসুধীরকের মতে, প্রয়ুত চান-ও-চার অবসর ‘সামরিক শাসনের পরাজয়ের প্রতিনিধিত্ব করে’ এবং একে ‘গণতন্ত্র সমর্থকদের উন্নতি’ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১২ জুলাই ২০২৩