আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পথসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে যুবলীগ নেতা ও উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে গেল উপজেলা নির্বাচনে তার নেতৃত্বে ৮ টি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করা হয় বলে উল্লেখ করেন। তার বিতর্কিত এ বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিরোধী পক্ষ। এমন কি সরকারি দলের নেতারাও বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেন।
সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ৮ জুন নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ আশাদুল হক সাক্ষরিত এ চিঠিতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ইসিকে অবহিত করতে বলা হয়।
অপরদিকে, যুবলীগ নেতা ও উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বিতর্কিত বক্তব্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৮ জনকে আইনী নোটিশ দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ৮ জুন এ নোটিশ দেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উখিয়া উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল এবং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীকে এ নোটিশ দেয়া হয়।
নোটিশে তিনি বলেন, গত ৭ জুন কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় “আমি ভোট ডাকাতি করেছি বলেই আপনি উপজেলা চেয়ারম্যান” এবং “৮ কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করে নৌকার জয় নিশ্চিত করেছি : যুবলীগ নেতা” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যুবলীগ নেতা ইমরুল। যা নোটিশূাতার নজরে আসে।
তার বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংগঠিত অনিয়ম, নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তন সুস্পষ্ট। নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট বর্তমান বিতর্ক এবং নির্বাচনী অনিয়মের বিষয়ে তার বক্তব্যটি তথ্য ভিত্তিক স্বীকারোক্তি। তার বক্তব্য থেকে এটাও স্পষ্ট ঐ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত সকলেই অনিয়ম ও ভোট ডাকাতির সাথে জড়িত ছিলেন। এবং এ অনিয়মে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তা প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েল এবং ইমরুল কায়েস চৌধুরী সরাসরি ভোট ডাকাতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩ এর ৭০, ৭৩, ৭৭,৭৯,৮০ ও ১ এর বিধি স্পষ্ট লঙ্ঘন।
তাই নোটিশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল বাতিল এবং উক্ত নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান এ আইনজীবী।