আঙ্কারা, ০৩ জুন – তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় শপথ নিতে চলেছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। স্থানীয় সময় শনিবার (৩ জুন) বিকেলে ৩টার দিকে তুর্কি সংসদে তিনি শপথ নেবেন। এরপর নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন এরদোয়ান। এবার তিনি তার অর্থনৈতিক কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর এরদোয়ান দেশটির আনিতকবীর অঞ্চলে কামাল আতাতুর্কের সমাধিস্থল পরিদর্শন করবেন। পরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানকারী রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য একটি নৈশভোজেরও আয়োজন করা হবে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানসহ ৭৮টি দেশ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এদিন সন্ধ্যায় এরদোয়ান নতুন মন্ত্রীসভা ঘোষণা করবেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এবার এরদোয়ানের মন্ত্রীসভায় সাবেক প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেহমেত সিমসেককে ফিরিয়ে আনার চূড়ান্ত সম্ভাবনা রয়েছে। আর এর মাধ্যমেই অ-রক্ষণশীল অর্থনীতি থেকে কিছুটা রক্ষণশীল অর্থনীতিতে ফিরে যেতে পারে তুরস্ক।
সিমসেক যখন ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। এখন তার মূল ভূমিকা হতে পারে, বছরের পর বছর ধরে চলা নীতি থেকে বের হয়ে এসে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও সুদের হার কমিয়ে দেওয়া ও বাজারের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে আসা।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, বর্তমান নীতি অব্যাহত থাকলে, ক্ষয়প্রাপ্ত বৈদেশিক রিজার্ভ ও অপরিবর্তিত মুদ্রাস্ফীতির কারণে আরও অস্থির হয়ে উঠবে তুরস্কের অর্থনীতি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তুর্কি মুদ্রা লিরা ক্রমেই তার মান হারিয়েছে। আর এরদোয়ান এসব বিষয় সংস্কারেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে আশা করছেন তুর্কিরা।
রয়টার্স বলছে, চলতি বছরের এপ্রিলে তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পায় ৪৪ শতাংশ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সুদের হার বাড়ানোয় বিরোধীরা এরদোয়ানের ব্যাপক সমালোচনা করে। সমালোচনার জেরে জনগণের কাছেও কিছুটা জনপ্রিয়তা হারান এরদোয়ান। আর এ কারণেই এবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে গড়িয়েছে। কেমাল কিলিচদারোলুর বিপক্ষে জয় পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে এরদোয়ানকে।
গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হন। দেশটির নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে ৫০ শতাংশ সমর্থন পেতে হয়৷ প্রথম দফার নির্বাচনে এরদোয়ান পেয়েছিলেন ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট৷ অন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী কেমাল পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ফলে স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়।
২৮ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এরদোয়ান। অন্যদিকে, প্রধান কেমাল পান ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
সূত্র: জাগো নিউজ
এম ইউ/০৩ জুন ২০২৩