সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

আন্তর্জাতিক বাজার পাচ্ছে না বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩

পাঁচ বছর আগে উৎক্ষেপণ করা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১-এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত চারশ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল)। বর্তমানে কোম্পানিটির মাসিক আয় প্রায় ১০ কোটি টাকা। তবে আয়ের প্রায় পুরোটাই দেশীয় বাজার থেকে আসছে। ক্রমান্বয়ে এই বাজার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কোম্পানিটি। তবে স্যাটেলাইটের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারছে না বিএসসিএল।

২০১৮ সালের ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ‘স্পেস এক্স’-এর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী যান ফ্যালকন-৯ এর মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হয় বাংলাদেশ।

তবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সফলতা পেলেও আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে পারছে না বিএসসিএল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথের দামের তুলনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ব্যান্ডউইথের দাম কয়েকগুণ বেশি হওয়ার কারণে বিদেশি বাজার ধরা যাচ্ছে না। আবার ব্যান্ডউইথের দাম কমালে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কম দামে ব্যান্ডউইথ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিএসসিএল।

বিএসসিএল গঠনের আগে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন জানিয়েছিল- উৎক্ষেপণের সাত বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর খরচ উঠে আসবে। তবে আয়ের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে তা সম্ভব হবে না। সাধারণত এই স্যাটেলাইটের আয়ু ১৫ বছর ধরা হয়।

স্যাটেলাইটটি তৈরি ও উৎক্ষেপণের দায়িত্ব ছিল ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালাস অ্যালেনিয়া স্পেস। স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠাতে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের খরচ দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।

বিএসসিএল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং দেশের সব বেসরকারি টিভি চ্যানেলসহ ৩৯টি টিভি চ্যানেল এবং দেশের একমাত্র ডিটিএইচ অপারেটর আকাশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার করছে। গত বছর দেশের দুটি ব্যাংক এটিএম সেবায় স্যাটেলাইটটি ব্যবহার শুরু করেছে। আরও অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে এ আলোচনা চলছে। অদূর ভবিষ্যতে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সেবার আওতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ  বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট যখন উৎক্ষেপণ করা হয়, তখন আমরা ছিলাম ৫৭তম দেশ। এখন সেটা ৮০টির বেশি দেশে পৌঁছেছে। এ কারণে বাজারে ব্যান্ডউইথের সাপ্লাই অনেক বেড়ে গেছে। চাহিদা কম থাকায় আমরা বিক্রি সেভাবে করতে পারছি না। করোনাভাইরাস মহামারীও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাজার সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলে তিনি জানান।

শাহজাহান মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি দেশে এবং ২০টি দেশের বাইরে বিক্রি করার কথা ছিল। এখন পর্যন্ত স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের ২২টি বিক্রি করতে পেরেছে কোম্পানি।

বিএসসিএলের চেয়ারম্যান বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদেশে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করতে না পেরে দেশের বাজারের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় বৈশ্বিক বাজারে স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথের সরবরাহ বেশি থাকায় এবং করোনার কারণে বিদেশের বাজারে বিপণন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এখন সে উদ্যোগ পুরোদমে শুরু হয়েছে।

আইএ/ ১৩ মে ২০২৩

 

 


আরো খবর: