বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ভারতে ধর্ষণ, বাংলাদেশি তরুণী পেলেন সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৩
ভারতে ধর্ষণ, বাংলাদেশি তরুণী পেলেন সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ


নয়াদিল্লি, ০৫ এপ্রিল – ভারতে স্বদেশীদের হাতে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। আদালত বলেছেন, ভারতের ‘নির্ভয়া ফান্ড’ থেকে সাত লাখ রুপি ভুক্তভোগী তরুণীকে দেয়া হবে। ভারতের কোনো রাজ্যে সম্ভবত গোটা ভারতে এই প্রথম কোনো বিদেশি সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পেলেন। ২১ বছর বয়সী বাংলাদেশি তরুণী, যিনি ২০২১ সালের মে মাসে ব্যাঙ্গালুরুতে বাংলাদেশিদের দ্বারাই দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।

ওই তরুণী একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের শিকার হয়েছিলেন। যখন নাবালিকা ছিলেন তখন তাকে ভারতে পাচার করা হয়েছিল। সেখানে তিনি যৌন শোষণ এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। মানবপাচারের শিকার ওই তরুণীসহ অপর এক নারীকে গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ওই রাজ্যের ‘সিটি সিভিল অ্যান্ড দায়রা আদালত’ মে ২০২২-এর আদেশে বলেছেন, ‘অপরাধের তীব্রতা এবং আদালতের অনুসন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী তরুণী ‘ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির (নাসলা)’ ক্ষতিপূরণ স্কিমের আওতায় সাত লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য।’

আদালত বিভাগীয় আইন সহায়তা কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে যেন ওই তরুণীকে এই ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। তবে যেহেতু ওই তরুণী বাংলাদেশে ফিরে এসেছে তাই আদালত বলেছেন, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তরুণীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে।

‘তালাশ অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি মানবাধিকার সংস্থা ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের সুবিধা দিয়ে থাকে। তালাশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সীমা দিওয়ান। তিনি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে (টিএনআই) বলেন, ‘তালাশ ভুক্তভোগীর প্রত্যাবাসনে পুলিশকে সহায়তা করেছিল। ১২ অভিযুক্তকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করেছিল। অভিযুক্তরা সবাই বাংলাদেশি ছিল। এখন ‘নির্ভয়া’ তহবিলের অধীনে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণেও সহায়তা করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তালাশ বেঙ্গালুরুর শহর, বেলাগাভি এবং বিজয়পুরা জেলা থেকে ৩০০ অবৈধ বাংলাদেশিকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশকে সাহায্য করেছিল।

দলবদ্ধ ধর্ষণ থেকে বেঁচে যাওয়া মেয়েটির সঙ্গে দ্য সংবাদ মাধ্যম নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে (টিএনআই) কথা বলেছে। ওই তরুণী বর্তমানে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে তার জীবন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘আমি আর্থিক এবং মানসিকভাবে খুব দুর্বল ছিলাম। আমার বন্ধু রিয়া আমাকে ৪০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে বেঙ্গালুরুতে একটি বিউটি পার্লারে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ভারতে গেলে সেখানে আমার পরিচিত মানুষরা আমাকে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছিল।

২০২১ সালের মে মাসে ভারতের বেঙ্গালুরুর রামামূর্তি নগরে একটি ভাড়া করা বাসায় স্বদেশীদের দ্বারা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তিনি। পাচার হওয়া কিছু বাংলাদেশি নারীকে পালাতে সাহায্য করায় অভিযুক্তরা তার ওপর এই যৌন নিপীড়ন চালায়।

এই মামলায় পুলিশ ১২ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। একই বছরের জুলাই মাসে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ভারতে অবৈধ প্রবেশ, মানবপাচার, জালিয়াতি, জাল নথি ব্যবহার করার (ভারতীয় পরিচয়পত্র যেমন আধার কার্ড) দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/০৫ এপ্রিল ২০২৩





আরো খবর: