প্যারিস, ২৪ মে – স্বল্প দূরত্বে ফ্লাইট চলাচল নিষিদ্ধ করেছে ফ্রান্স। মূলত কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে ফ্রান্স অভ্যন্তরীণ রুটে স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে যেখানে ট্রেনে যাওয়ার মতো বিকল্প উপায় রয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে যেখানে ট্রেনে একই যাত্রা আড়াই ঘণ্টার মধ্যে করা যেতে পারে সেসব রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে ফরাসি আইনপ্রণেতারা ভোট দেওয়ার দুই বছর পরে আইনটি কার্যকর হলো।
বিশ্বের সামনে এখন যেসব হুমকি রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন সেগুলোর একটি। বিশ্বে ইতোমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটি মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখনও খুব বেশি ফল মেলেনি। আর এই পরিস্থিতিতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইট নিষিদ্ধ করল ফ্রান্স।
বিবিবি বলছে, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে প্যারিস থেকে ন্যান্টেস, লিও এবং বোর্দোসহ বেশ কয়েকটি শহরের মধ্যে আকাশপথে ভ্রমণ বাতিল হয়ে যাবে। তবে কানেক্টিং ফ্লাইটগুলো প্রভাবিত হবে না।
সমালোচকরা সর্বশেষ এই পদক্ষেপকে ‘প্রতীকী নিষেধাজ্ঞা’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।
ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ এয়ারলাইন্স ফর ইউরোপ (এ৪ই)-এর অন্তর্বর্তী প্রধান লরেন্ট ডনসিল বার্তাসংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, ‘এই ভ্রমণগুলো নিষিদ্ধ করলে কার্বন নিঃসরণের ওপর ন্যূনতম প্রভাব পড়বে’। তার দাবি, এই ধরনের সিদ্ধান্তে পরিবর্তে সরকারগুলোর উচিত সমস্যাটির ‘বাস্তব এবং তাৎপর্যপূর্ণ সমাধানকে’ এগিয়ে নেওয়া।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইনগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ রিপোর্ট করেছে, গত বছর সারা বিশ্বের ফ্লাইটের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ কম ছিল।
অবশ্য আরও কঠোর নিয়ম চালু করার জন্য দাবির মুখে পড়েছিল ফরাসি সরকার।
জনসাধারণের ১৫০ জন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৯ সালে ফ্রান্সে’স সিটিজেনস’ কনভেনশন অন ক্লাইমেট গঠন করেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। জলবায়ু সম্পর্কিত এই নাগরিক কনভেনশন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, যেখানে চার ঘণ্টার কম সময়ের ট্রেন যাত্রা করার সুযোগ রয়েছে সেখানে যেন প্লেন যাত্রা বাতিল করা হয়।
কিন্তু কিছু অঞ্চলের আপত্তির পর তা কমিয়ে আড়াই ঘণ্টা করা হয়।
অবশ্য ফরাসি ভোক্তা গ্রুপ ইউএফসি-কুই চইসির এর আগে আইন প্রণেতাদের চার ঘণ্টার সীমা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। গ্রুপটি বলছে, ‘প্লেন গড়ে এই রুটে ট্রেনের তুলনায় যাত্রী প্রতি ৭৭ গুণ বেশি কার্বণ নির্গত করে। যদিও চলাচলের মাধ্যম হিসেবে ট্রেন বেশ সস্তা এবং যে সময় নষ্ট হয় তা ৪০ মিনিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ।’
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ২৪ মে ২০২৩