শিরোনাম ::
ঘুমধুম সীমান্তে ইয়াবা নিয়ে বাংলাদেশি-রোহিঙ্গাসহ ৪ মাদক চোরাকারবারি আটক মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়ল টেকনাফের বসতঘরের আঙিনায় মাদকের টাকার জন্য মা’কে খুন: হত্যাকারী নিজেই ধরা দিয়েছে পুলিশের হাতে পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে আ.লীগ গলায় ফাঁস দিয়ে ২ সন্তানের জননীর আত্মহত্যা পেকুয়ায় মহেশখালীতে মদ ভেবে কেমিক্যাল খেয়ে মাদক নির্মূল কমিটি সদস্যের মৃত্যু সেন্টমার্টিনকে বাঁচাতে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে : উপদেষ্টা টেকনাফে অভিযানে উদ্ধার তাজা রকেট হিট কানাডায় স্ত্রী ও সন্তানকে রেখেই তথ্য গোপন করে বিয়ের পিড়িতে কক্সবাজারের নুর!
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

‘সমৃদ্ধি’ যুদ্ধাবস্থায় ইউক্রেনে কেন নোঙর করল?

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২

‘সমৃদ্ধি’ যুদ্ধাবস্থায় ইউক্রেনে কেন নোঙর করল?
জয়েন্ট ওয়ার কমিটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর এলাকাটিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধকবলিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। আর ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ সে এলাকায় নোঙর করে ২২ ফেব্রুয়ারি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজটি কেন ইউক্রেইনের যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলে প্রবেশ করেছে সেই প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

শুক্রবার (৪ মার্চ) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসাইন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চার্টার পার্টি বিধিমালা অনুযায়ী কোনো জাহাজ কোম্পানি তার জাহাজের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধকবলিত এবং জলদস্যু প্রবণ এলাকাতে জাহাজ গমনেরর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। এক্ষেত্রে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের পক্ষ থেকে কে জাহাজটিকে যুদ্ধকবলিত এলাকায় গমনের অনুমতি দিল?

সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, জাহাজটি যুদ্ধকবলিত এলাকায় আটকে যাওয়ার পর জাহাজটির নাবিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনার কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা বলেন, জাহাজ পরিচালনায় বিএসসির সার্বিক অব্যস্থাপনার কারণে আজকে এই মৃত্যু ও নাবিকদের দুর্দশা দেখতে হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় মহামূল্যবান সম্পত্তি ‘এমডি বাংলার সমৃদ্ধির’ এ চরম ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এই মৃত্যুর দায় কে নেবে? এ ক্ষয়-ক্ষতির দায় কে নেবে? এছাড়া জাহাজে হামলায় নিহত নাবিক মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানের মরদেহ কীভাবে দেশে প্রত্যাবর্তন করা হবে?

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে চারটি দাবি দেওয়া হয়। এগুলো হলো-

১. নিহত নাবিক মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় বীর ঘোষণা এবং তার মরদেহ দেশে আনতে হবে,

২. ২৮ জন জীবিত নাবিকদের অতিদ্রুত নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে ও তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

৩. বিএসসির জাহাজ পরিচালনায় যে গাফিলতি হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি করতে হবে এবং তদন্ত কমিটিতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) দুই জন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪. রকেট হামলার পর জাহাজটিতে আগুন ধরে যাওয়ায় জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হওয়ার আশংকা ছিল। কিন্তু সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে এই আগুন নিভানোই জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়। তাই নাবিকদের এই কার্যকলাপের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও পুরষ্কার দেওয়া হোক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে নাবিকরা নিরাপদে আছেন, ভালো আছেন তাদেরকে নিরাপদে পোল্যান্ড নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) ড. পীযূষ দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের যে চার্টার পার্টি আছে, সে অনুযায়ী ইন্স্যুরাররা যদি ওয়ার রিস্ক প্রিমিয়াম নিয়ে কোথাও যাওয়ার পারমিশন দেয়। সেক্ষেত্রে আমাদের চার্টার পার্টি অনুযায়ী সেটা অ্যালাউ করতে হয়। ফলে জাহাজটি না পাঠানোর সুযোগ ছিল না। বাংলার সমৃদ্ধির আশেপাশে ২০-২২টা জাহাজ আছে। ওই কনডিশন ফুলফিল করেই সেখানে যাওয়া হয়েছে। কোনো ব্যত্যয় হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে হামলা করেছে রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ে বাংলার সমৃদ্ধি। বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯টা ২৫ মিনিটে জাহাজটি রুশ হামলার শিকার হয়। এ হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান (৩৩) নিহত হন। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নম্বর হোসনাবাদ ইউনিয়নের আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন।

বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরপরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অলভিয়া বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।


আরো খবর: