শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:৪১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

শঙ্কা কাটিয়ে সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে সম্প্রীতির বন্ধন

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২১

এম.এ আজিজ রাসেল:
নানা শঙ্কা কাটিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বাঙালি সনাতনী সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বসে সম্প্রীতির মহা মিলন মেলা। এসময় শ্রদ্ধা ভালোবাসায় মাতৃবিদায়ের বিষাদপূর্ণ অশ্রæ অঞ্জলির মাধ্যমে সাগরের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।

কুমিল্লার ঘটনার কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি বিসর্জন অনুষ্ঠানে। তবে প্রতি বছর ২০০ থেকে ২৫০ প্রতিমা বিসর্জন হলেও এবার নিরাপত্তা জনিত কারণে কমে আসে প্রতিমার সংখ্যা। শুধু মাত্র শহর ও আশপাশের এলাকার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। জেলার স্ব স্ব উপজেলা ও ইউনিয়নের নদী ও এবং পুকুরে দেওয়া হয় প্রতিমা বিসর্জন। সৈকতের বালিয়াড়িতে সব ধর্মের মানুষের সরব পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটক ও বিদেশীরা ছুটে আসে সৈকতে। এসময় সকলের কণ্ঠে ব্যক্ত হয় অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মানের দৃঢ় প্রত্যয়।

কুমিল্লার ঘটনায় বিষাদের দাগ কাটে সনাতনী সম্প্রদায়ের মনে। তাই এবার প্রতিমা বিসর্জনে বাদ দেয়া হয়েছে শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সীমিত পরিসরে বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। বেলা ৩টা থেকে প্রতিমা বহনকৃত গাড়ি আসতে শুরু করে। গাড়ি থেকে নামানোর পর আরতি ও আরাধনা শেষেই বিসর্জন দেয়া হয় স্ব স্ব মন্ডপের প্রতিমা। এসময় ঢোলের তালে তালে ‘মা দুর্গা কি জয়’ শ্লোগানে মুখরিত ছিল সমুদ্র পাড়। প্রতিমা বিসর্জনের পাশাপাশি ভক্তদের নাচে-গানে সৃষ্টি হয় আনন্দঘন পরিবেশ ।

বিসর্জন ঘিরে র‌্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য, পৌর আওয়ামী লীগ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

বিজয় দশমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান, ফাকির হাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নজিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বেন্টু দাশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তি সম্প্রীতির দেশ। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। মনে রাখতে হবে অশুভ শক্তির বিনাশ ও সত্যের আরাধনাই দুর্গোৎসবের বৈশিষ্ট্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার আধুনিক বাংলাদেশে যে সম্প্রীতি বজায় রয়েছে তা বিনষ্ট করার জন্য একদল বিশেষ গোষ্ঠীর তৎপরতা সবসময় লক্ষনীয়। যারা ধর্মীয় উৎসবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কোন দুষ্কৃতিকারি যেন সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’


আরো খবর: