শিরোনাম ::
থানা থেকে পালানো ওসিকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি পেকুয়ায় ২০ বছর গাড়ি চলাচল নেই রব্বত আলী পাড়া সড়কে! যে সংস্কারের পরিকল্পনা আছে সেটুকু এগিয়ে নিয়ে আমরা বিদায় নেব দেশে প্রথমবার ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক বছরে ৪৯ খুন! শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়িয়ে অধ্যাদেশ কক্সবাজার সৈকতে কাউন্সিলর হত্যার ঘটনায় আরেক কাউন্সিলর আটক রামুতে আইএফআইসি ব্যাংকের উদ্যোগে শীতার্তদের কম্বল বিতরণ রামুতে ভোক্তা অধিকারে জনসচেতনতায় কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস এর মতবিনিময় সভা চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে প্রশিক্ষন কর্মশালা
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এক বছরে ৪৯ খুন!

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫

এম.এ রাহাত, উখিয়া:

কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বেড়েই চলেছে। এপিবিএন সূত্র জানায় গত এক বছরে এসব আশ্রয়শিবিরে খুন হয়েছে ৪৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক।

গত এক বছরে আশ্রয়শিবিরগুলোতে ৩০৭টি মামলায় ৭২৫ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বেশির ভাগ আসামি আশ্রয়শিবিরের বাইরে উখিয়ার গহিন পাহাড়ের আস্তানায় অবস্থান করায় অনেক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারছেনা পুলিশ।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে উখিয়ার ২৬টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৭৭জন।

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে উখিয়ার ২৬টি আশ্রয়শিবিরের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও বর্তমানে শতাধিক স্থানে কাঁটাতার কেটে ফেলা হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠী সন্ধ্যার পর কাঁটাতারের ছেঁড়া অংশ দিয়ে আশ্রয়শিবিরে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ রোহিঙ্গার পাশাপাশি শরণার্থী সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অর্ধশতাধিক এনজিও-আইএনজিওর কর্মকর্তা–কর্মচারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রাণনাশের আশঙ্কায় এনজিও কর্মচারীরা বিকেল চারটার আগেই আশ্রয়শিবির ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সম্প্রতি আশ্রয়শিবিরগুলোতে খুনের ঘটনা আগের চেয়ে কমছে বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র। সর্বশেষ গেলো বছরের ২১ অক্টোবর সোমবার ভোর ৫ টার দিকে ১৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি বসতবাড়িতে ঢুকে একই পরিবারের ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন ১৭ নং ক্যাম্পের আহমেদ হোসেন(৬০), সৈয়দুল আমিন (২৮) ও আসমা বেগম(১৩)।

গত এক বছরে আশ্রয়শিবিরে মাদক চোরাচালান বেড়েছে অনেক। বেকার রোহিঙ্গারা মাদক চোরাচালানসহ সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ছেন। এপিবএন ৮ ও ১৪ এর তথ্যমতে গত এক বছরে বিপুল পরিমা ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ক্রিষ্টাল মেথ(আইস), বিয়ার, গাঁজা ও চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। মাদকের সাথে বাংলাদেশী টাকা ও মায়ানমারের মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়। গত এক বছরে মাদকের ১৩০ টি মামলায় ১৫৮ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন এপিবিএন।

অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারও বাড়ছে আশ্রয়শিবিরে। রোহিঙ্গা শিবির থেকে গেল বছর ওয়ান শুটারগান, বিদেশী পিস্তল, ও বিভিন্ন বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে এপিবিএন। গত ১ বছরে অস্ত্রের ১০২ টি মামলায় ১৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ত্রাসীদের ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলাও থেমে নেই। পুলিশ আক্রান্তের ৪টি মামলায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে মাদক, সন্ত্রাস নির্মুল ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি এপিবিএনের সাইবার ক্রাইম সেল কর্তৃক ১৬২ টি হারানো মোবাইল উদ্ধার ও বিকাশে ভুলক্রমে চলে যাওয়া ১লাখ ১৯ হাজার ৮শ টাকা উদ্ধার করেছে এপিবিএন।

অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি পালংখালীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন বলেন, ক্যাম্পের বাহিরে রোহিঙ্গাদের অবাধে চলাচল বন্ধ করা না গেলে গুম-অপহরণ কোনভাবেই রোধ করা সম্ভব না। ক্যাম্পের বাহিরে রোহিঙ্গাদের অবাধে যাতায়াত বন্ধ করা এবং ক্যাম্পের বাহিরে রোহিঙ্গাদের বাসাভাড়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিগত একমাস ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো খুন খারাবি বা সহিংসতা হয়নি। যদি প্রশাসন চায় রোহিঙ্গা তুচ্ছ ঘটনাও ঘটবে না।

উখিয়া থানায় অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আরিফ হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে এপিবিএনের পাশাপাশি আমরাও কাজ করে যাচ্ছি।

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন(এপিবিএন) এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ সিরাজ আমিন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত দুইমাস ধরে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। যার ফলে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আমরা রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে দুষ্কৃতকারীদের নিয়ন্ত্রণে সর্বদা সতর্ক অবস্থানে আছি।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গত দুইমাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। টেকনাফে যে অপহরণের ঘটনা ঘটছে তা রোহিঙ্গাদের মধ্যে। স্থানীয় কেউ অপহরণ হয়নি। স্থানীয়দের আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তারপরও আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছি।


আরো খবর: