হেলাল উদ্দিন টেকনাফ ::
রোজা শুরু থেকেই ফের সকল প্রকার সবজি, মাছ মাংসের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন কক্সবাজারের টেকনাফের ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৬ এপ্রিল) সারাদিন উপজেলার হাট-বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টেকনাফ উপরের বাজার, বাসষ্টেশন বাজার, হ্নীলা বাজার, হোয়াইক্যং বাজার, নোয়াপাড়া বাজার শাহ পরীর দ্বীপ বাজার, সাবরাং বাজার ও সদরের বটতলী বাজারে সকল প্রকার সবজি ও মাছ মাংসের দাম বাড়িয়ে বেচাকেনা করতে দেখা যাচ্ছে সবজি ও মাছ মাংস ব্যবসায়ীদের।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই উপজেলায় সবজির দাম বেড়েছে যেমন বেগুন প্রতি কেজি বাড়িয়ে ৩০-৭০ টাকা, শসা ৪০-৮০টাকা, লেবু ২০-৬০টাকা হালি, পটল৬০-৯০টাকা ,ধনেপাতা৯০-১৮০টাকা, করোলা৬০-৮০টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৭০টাকা, টমেটো ৩০-৭০টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০-১০০টাকা, আদা১২০টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৭০টাকা, গাজর ৭০-১০০টাকা, সিম ৬০-৮০টাকা, লাল শাক ২০-৪০টাকা, পুঁইশাক ৪০-৬০টাকা, ডাটা শাক ২০-৪০টাকা, পালং শাক ৬০- ৯০টাকা, প্রতি পিস ২কেজি সাইজ মিষ্টি লাউ ৭০-১০০টাকায় পেঁপে৪০-৮০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও, ইলিশ মাছ কেজি প্রতি ছোট ৫০০-৭০০ টাকা, মাঝারি ইলিশ ৭০০-১০০০টাকা, বড় ইলিশ ১১০০-১৫০০টাকা, কুরাল ৫০০-৭০০টাকা, চাঁদা ৭৫০-১৩০০টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৬০০-৭৫০টাকা, ছাগলের মাংস ৯০০-১০০০টাকা, ফার্মের মুরগী ১৫০-১৭০টাকা, সোনালী মুরগী ২৩০-২৭০টাকা, দেশীয় মুরগী ২৮০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাস ষ্টেশন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সবজি ব্যবসায়ী জানান, আড়তদার ও কৃষক পর্যায়ে থেকে সবজির দাম একটু বেশি কিনতে হচ্ছে , তাই বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। তাছাড়া আড়ত থেকেও কিছু সবজি আছে আমরা বেশি দামে কিনেছি সবজির দাম আমাদের বাড়ানোর কোনও হাত নেই।
বাস ষ্টেশন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, জেলেদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হয়। তাছাড়াও পরিবহন খরচ বেশি দিয়ে দূরপাল্লা থেকে মাছ কিনে এনে বিক্রি করতে হয়। তাই এখানে দাম বাড়ানোর সুযোগ আমাদের নেই।
মাংস ব্যবসায়ীও একই সুরে কথা বললেন, আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। সব খরচ পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তাই ক্রেতাদের কাছে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ধনেপাতার বেশি দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বাস ষ্টেশন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, রোজা শুরু হওয়ায় কৃষকরা ধনেপাতা আমাদের কাছে বেশি দাম রাখছে তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন, আড়তদারের মজুদ ও কৃষক পর্যায়ে ধনেপাতার উৎপাদন অনেক বেশি কোন ঘাটতি নেই। তারা কেন আমাদের কাছ থেকে এভাবে দাম বাড়িয়ে ধনেপাতা বিক্রি করছেন তা বুঝতেছিনা।
টেকনাফ উপরের বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সবজি ব্যবসায়ী জানান, আড়ত থেকে আমরা দাম বাড়িয়ে সবজি কিনছি। তাই সবজি ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সবজির দাম বাড়ানো আমাদের কোনও হাত নেই।
উপজেলার পল্লানপাড়া থেকে সবজি কিনতে আসা আবু তাহের জানান, আমি একজন ইজিবাইক টমটম চালক। ইজিবাইক চালিয়ে অল্প টাকা রোজগার করে সংসার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হয়। বর্তমানে রোজা কে কেন্দ্র করে সবজি ও মাছ মাংস ব্যবসায়ীরা যেভাবে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে আমার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মাছ মাংস কেনা দূরে থাক, কিছু সবজি না কিনে আমার বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে।
টেকনাফ বাস ষ্টেশন বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার জানান, পরিবহন খরচ বেশি হাওয়ায় বেশিরভাগ সবজি উত্তরবঙ্গ থেকে আমাদের এখানে আসে তাই খরচটা একটু বেশি পড়ে যাচ্ছে । আমাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে উৎপাদন যথেষ্ট আছে তারপরেও সবজি দাম কৃষকরা বাড়িয়ে বিক্রি করছে এটাই মূল কারণ সবজির দাম বাড়ার।
সবজি ও মাছ মাংস কিনতে আসা এ ব্যাপারে অনেক ক্রেতারা উপজেলা প্রশাসনকে শীঘ্রই বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আনা গেলে গরিব মানুষদের এ রোজার মধ্যে বেশি দামে সবজি কিনে খাওয়ার সম্ভব হবে না বলে জানান ক্রেতারা।