সোয়েব সাঈদ, রামু::
কক্সবাজারের রামুতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৃথক ঘটনায় ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় নিহতরা হলেন- রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের নতুন মুরাপাড়ার মৃত ছমি উদ্দিনের ছেলে নাজির হোসেন নাজু (৫০) ও একই উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ধোয়াপালং রাবেতা এলাকার মৃত ইবনে আমিনের ছেলে আবদুল আমিন (৪৫)।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজান উল্লাহ সিকদার জানিয়েছেন- রবিবার, ১৪ আগস্ট বিকাল ৩ টার দিকে জমিতে ধান রোপন করা নিয়ে মৃত ছমি উদ্দিনের ছেলেদের সাথে একই এলাকার জাফর আলমের ছেলেদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুপক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারমুখি অবস্থান নেয়। সংঘর্ষে উপুর্যপুরি দা এর আঘাতে দুপক্ষের কয়েকজন গুরতর আহত হন। নাজির হোসেন সহ কয়েকজনকে আশংকাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজির হোসেনকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ঘটনায় দুপক্ষের মধ্যে গুরতর আহতরা হলেন- নিহত নাজির হোসেনের ভাই আমির হোসেন, জাফর আলমের মেয়ে রাশেদা বেগম, ছেলে ইসমাইল ও মনজুর আলমের ছেলে মো. রশিদ। এরমধ্যে গুরতর আহত রাশেদা বেগমকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং রাবেতা এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের চেরে প্রতিপক্ষের দা’এর কোপে গুরতর আহত আবদুল আমিন শনিবার (১৩ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এরআগে ১০ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে কথা কাটাকাটির জেরে স্থানীয় আবদুল বারির ছেলে নুরুল হক ও জামাতা আমির হামজাসহ ৬/৭ জনের একটি দল তাকে মাথায় দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হক জানিয়েছেন- দীর্ঘদিন দুপক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো। এনিয়ে থানায় একটি পক্ষ অভিযোগ দিলে তা সমাধানের জন্য পরিষদে দেয়া হয়। সমাধানের জন্য তিনি ঘটনাস্থলেও যান। কিন্তু সমাধানের আগেই দুপক্ষে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এরই জের ধরে আবদুল আমিনকে বাড়ি থেকে ডেকে ৬/৭ জনের একটি দল পকিল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
এদিকে আবদুল আমিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবার (১৪ আগস্ট) সকালে রামুর খুনিয়াপালংয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল গনি, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আবদুল্লাহ বিদ্যুৎ, রমিজ আহমদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পৃথক ঘটনায় ২ জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরো রামুতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি।
রামু থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন পৃথক ঘটনায় ২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান- এসব ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।