যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে বাংলাদেশ। আর এটাই বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জের বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই তিনটি বড় দেশের মধ্যে দুটি আমাদের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের এমনভাবে চলতে হবে, যাতে সম্পর্কটা অত্যন্ত উন্নত করতে পারি।
আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্জন-সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট (বিএসটি)। এতে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আলী আশরাফ এবং সঞ্চালনা করেন বিএসটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান লিটু। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও বিএসটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ।
ড. মোমেন বলেন, একক দেশ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুব সুসম্পর্ক আছে। বন্ধু দেশ বলে তারা অনেক কিছু বলে, সুপারিশ দিতে পারে। বন্ধু না হলে কিছু বলত না, তখন আক্রমণ করত। আমরা ভালো সুপারিশ হলে অবশ্যই গ্রহণ করি। সবকিছুতে যে আমরা নিখুঁত, এটা ভাবা ঠিক হবে না। আমাদের কোনো দুর্বলতা থাকলে বন্ধু বলবে। আর যদি সত্যি খারাপ কিছু হয়, সেটা দেখব।
তিনি বলেন, ভারত ঐতিহাসিকভাবে বড় বন্ধু। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা অপূর্ব সম্পর্ক। বাংলাদেশ-ভারত বড় সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিনা বুলেটে এ ধরনের অর্জন কেউ করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে সোনালি অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে। খুব সুন্দর সম্পর্ক। ভারত এ বছর জি২০ সভাপতি হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুধু বাংলাদেশকে এ সম্মেলনে দাওয়াত করেছে। আমরা জি২০ সদস্য না। এই যে সম্মানটা তারা আমাদের দিয়েছে, এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের সুসম্পর্কের কারণে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য অনেক বেশি। তারাও চাচ্ছে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য। আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই তিন দেশের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ নয়। আমাদের একজন বড় নেতা আছেন, শেখ হাসিনা। খুব বাস্তববাদী নেতা। ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমাদের অবস্থানটি ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পাশেই বিরাট ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর। এর পাশেই চীন ও ভারত। তাদের সঙ্গে একটা ভারসাম্য রেখে আমাদের চলতে হয়। আমরা এটাকে এড়িয়ে যেতে পারি না।
সূত্র: সমকাল