ওয়াশিংটন, ০৯ ডিসেম্বর – জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সংযুক্ত আরব আমিরাতের করা গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আটকে গেছে। এর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে আমিরাত।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্রস্তাবটি তোলা হয়। আরব নিউজের বরাত এ খবর জানা গেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রস্তাবটি উত্থাপন করলেও তার সহপৃষ্ঠপোষক ছিল অন্তত ৯৭টি দেশ। এ দিন ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩টি দেশ। তবে ভোটদানে বিরত থাকে যুক্তরাজ্য। শেষ পর্যন্ত ভেটো ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিলে প্রস্তাবটি আটকে যায়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের ভেটো (আমি মানি না) ক্ষমতা রয়েছে। এদের কোনো একটি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিলে তা পাস করা যায় না।
সহিংসতা বন্ধ করার প্রস্তাবে ভেটো দেয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড বলেছেন, ‘প্রস্তাবটি ভারসাম্যপূর্ণ নয়। এতে বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়নি।
এদিকে গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি বলেন, গাজা ইস্যুতে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদকে অকার্যকর করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আবারও আমেরিকার কূটনীতি পোড়ামাটি নীতির প্রতি সমর্থন জানাল এবং এ কারণে এই ধ্বংসযজ্ঞ।’ ওয়াশিংটন ‘সাধারণ বোধবুদ্ধির’ পরিচয় দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।
ওদিকে গাজায় সংঘটিত মানবিক দুর্যোগের বিষয়ে ফ্রান্স অত্যন্ত উদ্বিগ্ন জানিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত নিকোলাস দে রিভিয়েরে বলেছেন, গাজা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ আবারও ব্যর্থ হয়েছে।
আর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দিয়ে ইসরায়েলের পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দেশটি। ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের দূত গিলাদ এরদান টুইট (বর্তমান এক্স) করে এ ধন্যবাদ জানান।
এই সপ্তাহেই কাউন্সিলকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছিলেন। জাতিসংঘের সনদের অধীনে মহাসচিবকে দেয়া কয়েকটি ক্ষমতার মধ্যে একটি বিরলভাবে ব্যবহৃত অনুচ্ছেদ ৯৯-কে অনুসারে তিনি বলেছিলেন, একটি মানবিক বিপর্যয় এড়াতে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন যা ‘সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্ভাব্য অপরিবর্তনীয় প্রভাব ফেলতে পারে, এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আসবে’।
আর্টিকেল ৯৯ এর ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য হুমকি হতে পারে, মনে হলে জাতিসংঘের মহাসচিব সেগুলো নিরাপত্তা পরিষদের নজরে আনতে পারেন।
এর আগে কাতারের মধ্যস্থায় গত ২৪ নভেম্বর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আনুষ্ঠানিকভাবে চারদিনের যুদ্ধ বিরতি অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিরতি মধ্যেও কয়েকটি হামলা চালায় ইসরায়েল। আর যুদ্ধ বিরতি শেষ হতেই বর্বর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে দখলদার বাহিনী।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩