গাজীপুর, ২১ এপ্রিল – গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়া একটি মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল মাইক্রোবাসের গ্লাস ভাঙচুর করে টাকা, মুঠোফোনসহ স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় মাইক্রোবাসের এক নারী যাত্রীর কান ছিঁড়ে সোনার দুল নিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঈদের ছুটিতে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসটিতে করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ডাকাতির কবলে পড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবু হেনা মোস্তফা, তাঁর স্ত্রী–সন্তান ও স্বজনেরা মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে গতকাল রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে রংপুর যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। রাতে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার এলাকা অতিক্রম করার পর যানজটে আটকা পড়েন। সেখান থেকে তাঁরা ধীরগতিতে টাঙ্গাইলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। থেমে থেমে এগিয়ে গিয়ে রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার চন্দ্রা ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে আবারও যানজটে আটকা পড়েন।
এমন সময় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ থেকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসে আক্রমণ করে। ভেতর থেকে গ্লাস না খোলায় ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গাড়ির দুই পাশের চারটি গ্লাস ভেঙে ফেলে। পরে ডাকাতরা ভেতরে থাকা সবাইকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে টাকা, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।
আবু হেনা মোস্তফা বলেন, ডাকাতরা মাইক্রোতে থাকা তাঁর স্বজনের কানে সোনার দুল দেখতে পায়। এ সময়ে তারা কান থেকে স্বর্ণালংকার ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তাঁর কানের লতি ছিঁড়ে যায়। তাঁর কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে দ্রুত কালিয়াকৈর সাহেববাজার এলাকার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর দুই কানেই ৯টি সেলাই দেয়া হয়। এ ছাড়া আঘাতপ্রাপ্ত অন্যদেরও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, ওই এলাকায় দুই পাশের ঘন জঙ্গলপ্রবণ এলাকা। সেই সুযোগে ছিনতাইকারীরা সেখানে ওঁত পেতে থেকে এমন হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মাইক্রোবাসের চালক আলমগীর হোসেন বলেন, রাতে মহাসড়কে ব্যাপক যানজট ছিল। যানজটের মধ্যে চন্দ্রা ফরেস্ট অফিসের সামনে যান আটকে যায়। সেখানে অনেকক্ষণ ধরে যানজটে থাকা অবস্থায় হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে হামলা করে। হামলাকারীদের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা রামদা, চায়নিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে আঘাত করতে থাকে আর জিনিসপত্র লুট করে পালিয়ে যায়।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২১ এপ্রিল ২০২৩