নয়াদিল্লি, ১১ মার্চ – ভারতে বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিয়ে উত্তাপ কমার লক্ষণ নেই। উল্টো তা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য গুজরাটের বিধানসভায় পাস হলো বিবিসির বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব। ওই প্রস্তাবে মোদিকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রে তথ্যবিকৃতি ঘটানোর জন্য বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে গত জানুয়ারি মাসে দুই পর্বের একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করে বিবিসি। কিন্তু সেই তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বটি ভারতে নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খারাপভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্যচিত্রকে ‘প্রপাগান্ডা’ হিসেবে চিহ্নিত করে। টুইটার, ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলো থেকে তথ্যচিত্রের সমস্ত চিহ্ন নামিয়ে ফেলার আদেশও জারি করে মোদি সরকার। তা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। বিরোধীরা ওই ‘নিষিদ্ধ’ তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
ঘটনাচক্রে জানুয়ারিতে এই তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়। ফেব্রুয়ারিতে আয়কর ফাঁকি দেয়ার মামলায় হানা দেয়া হয় বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের দপ্তরে। এবার সেই তথ্যচিত্রের জেরেই গুজরাট বিধানসভায় পাস করানো হলো বিবিসিবিরোধী প্রস্তাব।
শুক্রবার মোদি রাজ্যের বিধানসভায় দুই ঘণ্টা আলোচনার পর কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। প্রস্তাব সমর্থন করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সিঙ্ঘভি, বিজেপি বিধায়ক অমিত ঠক্কর, ধবলসিন জালা এবং মনীষা ভাকিল। পরে সিঙ্ঘভি বলেন, ‘এই তথ্যচিত্রটি শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে নয়, ১৩৫ কোটি ভারতীয়রও বিরোধী।’
প্রস্তাব পেশের সময় বিজেপি বিধায়ক বিপুল পটেল দাবি করেন, ভারত এবং ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিবিসির গোপন উদ্দেশ্য রয়েছে।
গুজরাট বিধানসভায় শুক্রবার কংগ্রেস বিধায়করা ওয়াক আউট করেন। তার পরই বিবিসি নিয়ে প্রস্তাব পাস করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। যে সময় এই প্রস্তাবটি পাস করানো হচ্ছিল, তখন অধিবেশন কক্ষে কোনো বিরোধী বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১১ মার্চ ২০২৩